দামুড়হুদার বাস্তুপুর মাদরাসার দাখিল পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ে
দামুড়হুদা প্রতিনিধি: হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দামুড়হুদার বাস্তপুর দাখিল মাদারাসার ৫৮ জন দাখিল পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বোর্ড ফিস (ফরমপূরণ) বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি ৮শ টাকা হারে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই মাদরাসার ভুক্তভোগী দাখিল পরীক্ষার্থীরা দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান দু’পক্ষের শুনানি শেষে আদায়কৃত অতিরিক্ত অর্থ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফেরত দেয়ার আদেশ দেন।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা জানান, দামুড়হুদার বাস্তুপুর দাখিল মাদরাসা থেকে চলতি ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য আমরা মোট ৫৮ জন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করি। মাদরাসার সুপার মিকাইল ইসলাম আমাদের কাছ থেকে বোর্ড ফিস বাবদ ২ হাজার ২শ টাকা করে আদায় করেন। পরে আমরা জানতে পারি ফরম পূরণ বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি ১ হাজার ৪০৫ হারে সংশ্লিষ্ট বোর্ড কর্তৃক নির্ধারণ করা আছে। তারপরও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র বাবদ ৭০ টাকা, প্রাকটিক্যাল খাতা স্বাক্ষর বাবদ ৫০ এবং মাদরাসায় দুটি দা কেনা বাবদ টাকা জোর জবরদস্তি করে আদায়ের চেষ্টা করে। আমরা এ বিষয়ে ইউএনওকে জানাবো বললে শিক্ষকরা আমাদের হুমকি দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোদের সমস্যা হবে। প্রাকটিক্যালে মার্কস পাবি না। আমরা শেষমেষ অনেকটা নিরুপায় হয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে বিষয়টি দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করি। এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ কুমার সাহা বলেন, বিষয়টি আমি কয়েক দিন আগে শুনেছি এবং ওই মাদারাসার সুপারকে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেয়ার জন্যও মৌখিকভাবে বলেছি। তারপরও তারা ফেরত দেয়নি।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান বলেন, এ সংক্রান্তে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ পেয়ে ওই মাদরাসার সুপারকে তলব করি। তিনিসহ মাদরাসার অন্য শিক্ষকগণ ভুল স্বীকার করেন এবং আদায়কৃত অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেবেন বলে জানান। আদায়কৃত ওই অতিরিক্ত অর্থ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফেরত দেয়ার জন্য আদেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মাদরাসার সুপার মিকাইল ইসলাম নিজেদের ভুল স্বীকার করে বলেন, হাইকোর্টের বিষয়টি আমাদের জানা ছিলো না। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে ওই মাদরাসার সুপারসহ অন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকার ভুক্তভোগী অভিভাবক মহল।