স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীতে যানজট নিরসনে বহুল প্রত্যাশিত মেট্রোরেল নির্মাণে গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে মেট্রোরেল আইন-২০১৫ বিল পাস হয়েছে। বিলটি পাসের সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংসদকে জানান, মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালে। তবে এর পাঁচ বছর আগেই, অর্থাৎ ২০১৯ সালের মধ্যেই এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নতুন প্রজন্মের স্বপ্নের এবং বর্তমান সরকারের মেগা প্রকল্প হচ্ছে দেশের ইতিহাসে প্রথম এ মেট্টোরেল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রাজধানীর উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের কিছু বেশি দীর্ঘ নির্মিতব্য এ মেট্রোরেলের স্টেশন হবে ১৬টি। ভ্রমণ সময় লাগবে মাত্র ২৮ মিনিট। ঘন্টায় এ মেট্টোরেল প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করতে পারবে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে, আর মেট্রোরেল হচ্ছে জাইকার সহযোগিতায়।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলের উপর এমএ হান্নান, হাজি মোহাম্মদ সেলিম ও রুস্তম আলী ফরাজী জনমত যাচাই-বাছাই প্রস্তাব জমা দিলেও তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এর আগে গত ৩০ নভেম্বর সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলটি পাসের আগে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংসদে বলেন, ঢাকা শহরের যানজট নিরসন এবং জনসাধারণকে দ্রুত ও উন্নত গণপরিবহন সেবা দেয়ার লক্ষ্যে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ প্রথম মেট্রোরেল চালু হবে। তাই মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সুনির্দ্দিষ্ট আইনের প্রয়োজন। সেজন্য এ বিলটি আনা হয়েছে।
পাস হওয়া বিলে মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণের জন্য একটি উপকমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া মেট্রোরেল পরিচালনা ও অনুমোদন ছাড়া মালিকানা হস্তান্তর নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই রেল স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের সুযোগ রাখা হয়েছে। মেট্রোরেলে চলাচলকারী সকলের বীমা থাকবে। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে যাত্রীরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাবে।
এ রেল চলাচলে বাধা সৃষ্টি, বিনা টিকেটে ভ্রমণ এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ শাস্তির মধ্যে রয়েছে ১০ বছর কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা। বিলে মেট্রোরেলের যাত্রীদের জন্য বীমার বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেলের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ আইনের বিধান অনুযায়ী ভূমি অধিগ্রহণের বিধান রাখা হয়েছে।
ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে সংসদে ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন-২০১৫ উত্থাপন করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।