পুলিশের সাথে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত ৩ শতাধিক : গ্রেফতার ৭৩

 

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার হারদী, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রোববার পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৩৬১ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ সময় ৭৩ জনকে আটক করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা জাহানকে কোটবাড়ী তহশিল অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। গেজেট সংশোধন এবং ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ও প্রশিক্ষণের ভাতা বাড়ানোর দাবিতে রোববার সারাদেশে আন্দোলনের এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীরা এদিন বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষাও বর্জন করে। তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে সকালেই ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দেয়।

প্রকৌশলীর সংজ্ঞায় ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অন্তর্ভুক্ত করে ২০০৮ সালের বিতর্কিত গেজেট সংশোধন এবং ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ও প্রশিক্ষণ ভাতা বাড়ানোর দাবিতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছেন। গতকাল রোববার সকাল ১০টা ও বেলা ২টা থেকে শেষ বর্ষসহ বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। শিক্ষা শেষে চাকরির পদমর্যাদাসহ দু দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারাদেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে বিক্ষোভ করেছেন পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, সারাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিউটের দু দফা দাবির অংশ হিসেবে গতকাল হারদী মীর শামছুল ইসলাম পলিটিকনিক ইনস্টিউটের ছাত্রছাত্রীরা নির্ধারিত পরীক্ষা বর্জনসহ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। গতকাল রোববার সকালের নির্ধারিত পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্ররা দু দফা দাবিতে এ আন্দোলন করেছেন। সরকার পলিটেকনিক ছাত্রদের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার সার্টিফিকেট না দিয়ে সুপারভাইজার সার্টিফিকেট দেয়া ও ২য় শ্রেণি থেকে ৩য় শ্রেণির কর্মকর্তা দেয়ার ঘোষণা দিলে সারাদেশের পলিটেকনিকের ছাত্রছাত্রীরা এ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এরই অংশ হিসেবে গতকাল হারদীর মীর শামসুল ইসলাম পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছেন। সকালে তাদের নির্ধারিত পরীক্ষায়ও তারা অংশগ্রহণ করেনি। বেলা ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, ওসি তদন্ত নাজমুল ইসলাম, সেকেন্ড অফিসার লুৎফুল কবীর, এএসআই রাশেদসহ থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য কলেজে উপস্থিত হন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনজুমান আরা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আন্দোলন করেন তাতে কোনো আপত্তি নেই। তবে কোনো রকম বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করবেন না। ছাত্রছাত্রীদের দাবি তাদের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারে সার্টিফিকেট দিতে হবে ও ২য় শ্রেণির কর্মকর্তার মর্যাদা দিতে হবে তা না হলে আন্দোলন আরও ব্যাপক পর্যায় ধারন করবে।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, শিক্ষা শেষে চাকরির পদমর্যাদাসহ দু দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারাদেশের ন্যায় পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে মেহেরপুর কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার বেলা ১০টার দিকে মেহেরপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে কারিগরি বোর্ডের অধীনে দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

মেহেরপুর কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব ফজলুল হক জানান, দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমিস্টারের ১৭০ জন পরীক্ষার্থীর পর্ব সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। পরীক্ষার সমস্ত প্রস্তুতি শেষ করার পরও কোনো পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে না আসায় সকলকে অনুপস্থিত দেখিয়ে বোর্ডে তথ্য পাঠানো হয়েছে। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন বলেন, পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না আসায় কেন্দ্র সচিবকে বাংলাদেশ সরকার ও কারিগরি বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, পেশাগত বৈষম্য নিরসন ও সুপারভাইজিং পদ পরিবর্তনসহ দু দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার থেকে শুরু হওয়া ৪টি সেমিস্টারের বোর্ড পরীক্ষা বর্জন করেছে তারা।

দাবি আদায়ে রোববার সকাল ১০টার দিকে পলিকেটনিক ইনিস্টিটিউটের প্রধান ফটক ও অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে শ শ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছে। পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম জাকির হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের  কারণে পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা স্থগিত করেছে। ক্যাম্পাস ও আশপাশ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে ঢাকার সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর-১০, মহাখালী, শ্যামলী ও তেজগাঁও এলাকায় বিক্ষোভ করেন। বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদের (বাকাছাপ) কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের প্রকৌশলী হিসেবে ঘোষণা দেয়া ও অন্যান্য পেশার সাথে বেতনবৈষম্য দূর করার দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। তিনি জানান, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা টেক্সটাইল প্রকৌশলীরা শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার সময় মাসে ১১ হাজার টাকা ভাতা পান, কিন্তু তারা পান ৫০০ টাকা। এ বৈষম্য দূর করার ব্যাপারে সরকারকে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত দিতে হবে। এদিকে এসব ঘটনায় সকাল থেকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলো ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে সকালেই ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দেন। ইনস্টিটিউট ও ছাত্রাবাসগুলো পুলিশ ঘিরে রেখেছে।

অপরদিকে কোটবাড়ি সড়ক এলাকায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সকাল ৯টা থেকে কাঠের গুঁড়ি ও বালুভর্তি বস্তা ফেলে কুমিল্লা-কোটবাড়ি সড়ক অবরোধ করে রাখেন। ওই সময় পুলিশ বাধা দিলে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে কোটবাড়ি এলাকা রণক্ষেত্রে পরণত হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা জাহানের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। তারা বিজয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি অফিসে হামলা চালিয়ে কাগজপত্র তছনছ করে তাতে আগুন দেন। সংঘর্ষে ১০ জন পুলিশসহ ২০ জন আহত হন।

বেলা দেড়টার দিকে ইউএনও ফাতেমা জাহান বলেন, পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। পরে ৱ্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরের দু নম্বর চার রাস্তার মোড়ে গতকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২-৪০ মিনিট পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে ২০-২৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের একটি আবর্জনাবাহী যান, ট্রাক, লরি রয়েছে। এ সময়ে আগে থেকে অবস্থানকারী পুলিশ তাদেরকে বারবার রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। এক পর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার পরে তারা শিক্ষার্থীদের অক্সিজেনমুখি সড়কের দিকে  ধাওয়া করলে সড়ক অবরোধমুক্ত হয়। এ দেড় ঘণ্টায় দু নম্বর এলাকার চারপাশে যানবাহনের তীব্র জট বেধে যায়। অবরোধ আটকা পড়ে রোগীবাহী দু তিনটি অ্যাম্বুলেন্স।

পটুয়াখালীতে পরীক্ষা বর্জন করে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংর্ঘষ চলে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পুলিশের একটি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন এবং ক্যাম্পাসের বাইরে বেশকিছু অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। সংঘর্ষের ঘটনায় সাংবাদিক, পুলিশসহ অর্ধশত লোক আহত হন। এখন পর্যন্ত পুলিশ ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালিয়ে ১২ জনকে আটক করেছে।

পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ হাসান মো. কামরুজ্জামান জানান,  আজকের (গতকালের) সকালের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অংশ নেননি। এখন ক্যাম্পাস কিছুটা শান্ত। ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

নোয়াখালীতে বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালী আইডিয়লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দু শতাধিক শিক্ষার্থী শহরের গ্যারেজ এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পরে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একটি ট্রাক, একটি বাসসহ পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ইনস্টিটিউটের সামনে প্রায় আধা ঘণ্টা মাইজদী-সোনাপুর সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে ওই সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে সুধারাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলার পর দুপুর ১২টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

রাজশাহীতে সকাল ৮টা থেকে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রীরা পরীক্ষা বর্জন করে ইনস্টিটিউটের বাইরের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ছাত্রীদের লাঠিপেটা করে। এতে অন্তত ২০ ছাত্রী আহত হন। নগরের শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ছাত্রীরা শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। হলে পরীক্ষার্থীদের ঢুকতে দিচ্ছিলেন না। এ কারণে তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকা হয়েছে। এতে ভয়ে ছাত্রীরা পালিয়ে যান। তাদের লাঠিপেটা করা হয়নি।

কুড়িগ্রামে পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টায় ইনস্টিটিউট থেকে মিছিল নিয়ে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সমবেত হন। সেখানে আধাঘণ্টা মানবন্ধন কর্মসূচি শেষে সমাবেশ করেন বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদের (বাকাছাপ) কুড়িগ্রাম জেলা শাখা। সেখানে বক্তারা জানান, তারা ডিপ্লোমা পাস করে সুপারভাইজার হতে চান না, প্রকৌশলী হতে চান। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি না মানলে সারা দেশে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এ প্রসঙ্গে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আবদুল কুদ্দুস সরদার জানান, বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সকালে বিভিন্ন বিভাগে ৫৮১ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিলো। তাদের মধ্যে ১৩৬ জন পরীক্ষা দিয়েছেন।

বগুড়ায় পূর্বনির্ধারিত রুটিন অনুযায়ী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সকাল ১০টায় কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী পরীক্ষার হলে উপস্থিত হলে খাতা ও প্রশ্নপত্র বিতরণ শুরু হয়। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হলের বাইরে থেকে ব্যাপক ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। একপর্যায়ে পরীক্ষার্থীরাও তাদের সাথে যোগ দিয়ে ভাঙচুর শুরু করলে পরীক্ষা পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের সংর্ঘষ বাধে। শিক্ষার্থীরা ইনস্টিটিউটের সামনে সাতমাথা-শেরপুর সড়ক অবরোধ করে বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় চার ছাত্রকে আটক করা হয়। বেলা ১টার দিকে টিএমএসএস পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

রংপুরে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে শহরের পায়রা চত্বরে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় তারা শহরের যমুনা ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও ভরসা টাউয়ারে ইটপাটকেল ছুড়ে কাচ ভাঙচুর করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা করে। এতে ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ ১৭ জনকে আটক করেছে। শহরে ১২টি মাইক্রোবাস-অটোরিকশা ও তিনটি ভবনের জানালার কাচ ভাঙচুর করেছেন শিক্ষার্থীরা।