মামলা : আমানতকারীদের অভিযোগে পিডিসহ আটক দুজন জেলহাজতে
মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর শহরের উপকন্ঠে রাতারাতি গজিয়ে ওঠা দীঘিরপাড়াস্থ সামাজিক অগ্রদূত শিক্ষা প্রোগ্রাম লিমিটেডের ৮ কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাত আরো ৬/৭ জনের নামে মামলা হয়েছে। প্রতারণার শিকার মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের নতুন মদনাডাঙ্গা গ্রামের দাউদ হোসেনের ছেলে মিলন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে গতকাল বুধবার থানা পুলিশ আটক এমডিসহ দু জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, মেহেরপুর শহরের উপকণ্ঠ মেহেরপুর পৌর এলাকার দীঘিরপাড়ায় প্রায় এক সপ্তা আগে একটি দোতালা বাড়ি ভাড়া নিয়ে সামাজিক অগ্রদূত শিক্ষা প্রোগ্রাম লিমিটেড নামের এক প্রতারক কোম্পানি অফিস খুলে বসে। ওই অফিসে জন্য শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগ করার লক্ষ্যে বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালায়। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষক, সুপারভাইজার ও এরিয়া ম্যানেজার পদে লোক নিয়োগের শেষ সময় সীমা নির্ধারণ করে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। এদিকে লোভনীয় বেতনে চাকরির আশায় মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামের যুবক-যুবতীরা আবেদন করতে এলে আবেদনকারীদের নিকট থেকে এরিয়া ম্যানেজার পদের জন্য ২৯ হাজার ৫শ’ টাকা, সুপার ভাইজার পদের জন্য ৮ হাজার টাকা এবং শিক্ষক পদের জন্য ২ হাজার টাকা করে জামানত নেয়। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত এরিয়া ম্যানেজার পদের জন্য ৩ জন, সুপার ভাইজার পদের জন্য ২১ জন এবং শিক্ষক পদের জন্য ৮৩ জন আবেদনসহ জামানতের টাকা জমা দেয়। চাকরি দেয়ার আগেই জামানত হিসেবে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭শ’ টাকা জমা নেয়ায় অনেকের মনে সন্দেহের দানা বাধতে শুরু করে। খবর দেয়া হয় মেহেরপুর সদর থানা পুলিশে। মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ ওই দিন দুপুরে সামাজিক অগ্রদূত শিক্ষা প্রোগ্রাম লিমিটেডের অফিসে অভিযান চালায়। তারা বৈধ্য কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়। এ সময় অনেক চাকরি প্রার্থী সেখানে জমায়েত হয়। ওই সময় পুলিশ মেহেরপুর গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে সামাজিক অগ্রদূত শিক্ষা প্রোগ্রাম লিমিটেডের পিডি জাহিদুল (৩৫) এবং একই উপজেলার ধর্মচাকি গ্রামের আইনাল হকের ছেলে মেহেরপুর ইনচার্জ আরিফকে (৩০) থানায় নিয়ে আসে। একই সাথে জব্দ করা হয় অফিসের খাতাপত্র।
এদিকে ওই দিন মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের নতুন মদনাডাঙ্গা গ্রামের দাউদ হোসেনের ছেলে মিলন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে সামাজিক অগ্রদূত শিক্ষা প্রোগ্রাম লিমিটেডের এমডি সাইফুল ইসলাম (৩৫), মার্কেটিং ম্যানেজার রেজাউল করিম (৪০), গাংনী উপজেলার ধর্মচাকি গ্রামের আইনাল হকের ছেলে প্রজেক্ট ডিরেক্টর আরিফুল ইসলাম (২৭), একই উপজেলার গাড়াডোব রাইচমিলপাড়ার হাবিবুর রহমানের ছেলে অ্যাসিসটেন্ট প্রজেক্ট ডিরেক্টর জাহিদুল হক (৩৪), সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে জোনাল ম্যানেজার জামিরুল ইসলাম (২৭), এরিয়া ম্যানেজার দীঘিরপাড়া বেলের মাঠ এলাকার সুমন (২০), পলাশ (২২) ও হামিদুল (৪০)। এদিকে পুলিশ গতকাল বুধবার আটক এমডিসহ দুজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।