‘সময় আর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না’ এ সত্যকে বিমূর্ত করে নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয় হয়েছে আজ। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে দিন যায় ও দিন আসে। দেখতে দেখতেই বিদায় নিল সুখ-দুঃখের আরেকটি বছর-২০১৪ সাল। সবকিছুকে ছাপিয়ে আজ নতুনের কেতন ওড়ে। নতুন বছরের নতুন দিনে শুভেচ্ছা।
গেলো বছরটির ব্যাপারে আমাদের অনুভূতি মিশ্র। রাজনীতির গুমট বাধা পরিবেশ। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা। জাতীয় ক্রিকেট দল আমাদের যে উৎসাহ দিয়েছে, নতুন বছর তা অনুপ্রেরণা জুগিয়ে আরো কিছু বয়ে আনবে। কেননা, প্রতিটি নতুন বছর আমাদের মনে নতুন নতুন স্বপ্ন নিয়ে উদিত হয়। আমরা আমাদের স্বতন্ত্র ও ঐতিহ্যমণ্ডিত বাংলাবর্ষকে লালন করলেও আন্তর্জাতিকতা ও বিবিধ কারণে অফিস-আদালত, এমনকি ব্যক্তিগত জীবনেও, ইংরেজি নববর্ষকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমরা জানি, বিশ্বঅর্থনীতি এখন এশিয়ামুখি। আরও স্পষ্ট করে বললে বর্তমানে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার দিকে অগ্রসরমান। অর্থনীতি, সামরিকসহ নানা ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিবেশী চীন ও ভারতের উত্থান বিস্ময়কর। যেহেতু বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সন্নিহিত কোণে অবস্থিত, তাই এ দেশের সম্ভাবনাও অনেক। সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রয়োজন সঠিক, দক্ষ ও বিচক্ষণ নেতৃত্ব। এ নেতৃত্ব শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সকল ক্ষেত্রেই প্রয়োজন।
বস্তুত প্রতিটি বছরের সাফল্য নির্ভর করে আমাদের কর্মকাণ্ডের ওপর। আমরা যদি ভালো কাজ করি, মনেপ্রাণে পরিশ্রম করি, তবে প্রতিটি বছরকেই ব্যক্তিগতভাবে যেমন, তেমনি জাতীয়ভাবেও অবিস্মরণীয় করে রাখতে পারি। যে স্বর্ণযুগ আমাদের জন্য হাতছানি দিয়ে ডাকছে, তার জন্য আমরা এলে কতোটা প্রস্তুত? এই প্রশ্ন আমাদের প্রত্যেকের মনেই জাগ্রত থাকা দরকার। যদি আমরা রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষার মাধ্যমে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পারি, তাহলেই আমাদের জীবনে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
নববর্ষের ঊষার আলোকে সম্পূর্ণ নতুন শক্তি ও সাহসে শুরু হোক আমাদের পথচলা। নূতন বছরে আমরা নতুনভাবে বাঁচবারই স্বপ্ন দেখি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কাটিয়ে উঠুক, চাঙ্গা হোক অর্থনৈতি। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে ২০১৫ সালের প্রতিটি দিন হোক সুন্দর ও কল্যাণময়। শুভ নববর্ষ।