গেলো দিন যেমনই হোক নতুন দিনগুলো আসুক সুন্দর

দিন আসে দিন যায়। বছর আসে বছর বিদায় নেয়। দিনগুলো হারায় কালের গহ্বরে। দিন গণনার বর্ষপুঞ্জি পুরাতনটা দেয়াল থেকে নামিয়ে নতুনটা তোলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আরো একটি বছর বিদায় নিচ্ছে আজ। বিদায়ের বছর কেমন গেলো, আগমনী দিন তথা আসছে বছর কেমন আসছে? তা নিয়ে নানাজনে, নানা মত থাকতেই পারে। তবে সকলেরই প্রত্যাশা সুন্দরের। সুন্দর সমৃদ্ধতা বয়ে আনুক নতুন বছর ২০১৫।

বিদায়ী বছরের শেষ দিনে পেছনের দিকে তাকালে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসীর সামনে সর্বজনীন উজ্জ্বল সুখ-স্মৃতি খুঁজে পাওয়া যেমন ভার, তেমনই খুব মন্দের হৃদয়বিদারক কষ্ট স্মৃতিও অহরহ নয়। ভালো-মন্দেই কেটেছে বিদায়ী বছর। দেশবাসীর কাছে বিদায়ী বছরের শুরুটা ছিলো রাজনৈতিক অস্থিরতার, অনিশ্চয়তার। ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী দিনগুলো পূর্ববর্তি বছরের শেষ দিকের দিনগুলোর মতো অতোটা রক্তাক্ত ছিলো না বটে, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে গোটা বছরই কেটেছে অনেকটা গুমট পরিবেশে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বেশ কয়েকজনের সাজা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর করা হয়েছে কয়েকজনের। বেশ কিছু হরতালেরও মুখোমুখি হতে হয়েছে দেশবাসীকে। বছরের শেষভাগেও একই কারণে হরতাল। আর আঞ্চলিক বিষয়গুলো? দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবার হারিয়েছে একজন সহকর্মীকে। মোমিনপুর প্রতিনিধি সদরুল নিপুলকে নৃশংসতার শিকার হয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে। এ কষ্ট বয়ে বেড়াতে হচ্ছে যেমন, তেমনই চুয়াডাঙ্গায় বিদায়ী বছরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৪১টির অধিক। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি পারিবারিক। আত্মহত্যা? অসংখ্য। চমকে ওঠার মতো। মেহেরপুরেও হত্যা এবং ডাকাতি অপহরণের সংখ্যা চুয়াডাঙ্গার তুলনায় কম নয়। ঝিনাইদহের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিলো আরো ভয়াবহ। বছরের শেষলগ্নেও অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষকসহ বেশ কয়েকজনকে খুন হতে হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসীর মধ্যে যাদেরকে বিদায় বছরে হারাতে হয়েছে নিকটজনকে তাদের প্রতি সমবেদনা সব সময়ই জানিয়ে এসেছে মাথাভাঙ্গা পরিবার। বিদায়ী বছরে শুধুই কি বেদনার? অবশ্যই না। চুয়াডাঙ্গাবাসী পেয়েছে হুইপ। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনকে জাতীয় সংসদের হুইপ হিসেবে এ বছরেই নিযুক্ত করা হয়। এটা অবশ্যই এলাকাবাসীর প্রাপ্তি। এরকম দৃশ্যমান প্রাপ্তির পাশাপাশি উন্নয়নে আরো অনেক কিছুই হয়েছে। অনেকেরই বিদায় বছর সফলতার বছর হয়ে এসেছে। দেশের স্বনামধন্য উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি যোগ্যতা অর্জনে এলাকার শিক্ষার্থীদের সফলতা আগামী দিনের শিক্ষার্থীদের উৎসাহ জোগাবে। মাথাভাঙ্গা পরিবার সব সময়ই ইতিবাচক খবরের প্রত্যাশী।

আজকের সূর্যটা অস্ত যাবে। সন্ধ্যা গড়িয়ে মধ্যরাত হবে। ঘড়ির কাঁটা ১২টা পেরুলেই নতুন বছরের সূচনা হবে। এ সূচনা লগ্ন স্মরণীয় করতে বিশ্বজুড়েই উৎসবের আমেজ ফুটে উঠবে। কারণ খ্রিস্টাব্দ বিশ্বের সিংহভাগ মানুষের দিনপঞ্জি হিসেবেই স্বীকৃত। বর্ষবরণ যেন বেদনার না হয়, সেদিকে যেমন নজর রাখা দরকার, তেমনই নতুন বছর সুন্দর হোক, সকলের জীবনে বয়ে আনুক সফলতা, সমৃদ্ধতা। এ প্রত্যাশায় সকলকে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’।

Leave a comment