চাঁদার টাকার ভাগ নিয়ে দর্শনায় চাপা উত্তেজনা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের হাতে আটক তিনটি কাভার্ড ভ্যান ভর্তি প্রায় ৭ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় যন্ত্রাংশ শেষ পর্যন্ত বৈধ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। ফলে ছেড়ে দিয়েছে কাস্টমস্ কর্তৃপক্ষ। আর তা ছাড়ানো দেখে দর্শনার কয়েকটি গ্রুপ অর্থ আদায়ে মেতে ওঠে। তা নিয়ে উত্তেজনা বাধে।
জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ এলাকা থেকে কাভার্ড ভ্যান ভর্তি ভারতের তৈরি বিভিন্ন যানবাহন ও রাইস মিলের যন্ত্রাংশ জব্দ করা হয়। দর্শনা কাস্টমস্ গোডাউন থেকে এসব পণ্যের আমদানিপত্র ও সংখ্যা সঠিক দেখিয়ে তা ছাড়িয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকা নবাবপুরের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারের মুখপাত্র। এদিকে সাত কোটি টাকার পণ্য দর্শনা কাস্টমস্ গোডাউন থেকে ছেড়ে দেয়া হবে। এ খবর জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুটি গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এই চাঁদার টাকা পাওয়া না পাওয়া, পরবর্তীতে ভাগাভাগি নিয়ে দু পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে দর্শনা শহরে চাপা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
৬-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন চুয়াডাঙ্গা গত ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ৩টি কাভার্ড ভ্যান ভর্তি যন্ত্রাংশ সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করে ওইদিনই দর্শনা কাস্টমসে জমা দেয়। শুল্ক গুদামে ঢোকানোর আগে প্রত্যেকটি মালামাল হিসেব করে দেখা যায় উদ্ধারকৃত যন্ত্রাংশের মুল্য প্রায় ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ভারতীয় এসব মালামালের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ছিলেন যশোর বেনাপোলের সুজুকি এন্টারপ্রাইজ। যার মালিক লুৎফর রহমান এবং আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকা নবাবপুরের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ার নামের একটি কোম্পানি।
সূত্র জানিয়েছে, একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালামাল এ চালানের ভেতরে ছিলো। ঋণপত্র (এলসি চালান) ও আমদানির ছাড়পত্রের সাথে উল্লেখিত মালামালের মিল না থাকায় বিজিবি তা জব্দ করে। পরবর্তীতে যেকোনো উপায়ে যশোর কাস্টমস কমিশনারের কার্যালয় থেকে বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে ১৫ দিন পর গত বৃহস্পতিবার আটককৃত মালামাল ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য দর্শনা আসেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। অথচ বিজিবির হাতে ধরা পড়ার পর পরই এসব মালামাল বৈধ বলে তারা দাবি করলেও দু দিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও বৈধ কাগজপত্র তখন তারা জমা দিতে পারেনি। তাছাড়া শুক্রবার ছুটির দিনে কাস্টমস্ গোডাউন থেকে জব্দ হওয়া মালামাল কীভাবে বের করা হচ্ছিলো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
তবে চুয়াডাঙ্গা কাস্টমস্ সুপার আনোয়ার হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা চালিয়ে তার মোবাইলফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অপরদিকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদাবাজির বিষয়ে দর্শনা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের অভিযুক্ত নেতাকর্মীদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।