স্টাফ রিপোর্টার: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় একটি বাস খালে পড়ে আটজন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার বিশ্বাসবাড়ী এলাকায় খুলনা-বরিশাল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ছয়জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- বরিশাল জজকোর্টের অ্যাডভোকেট মুকুল রঞ্জন সিংহ, পটুয়াখালীর লেবুখালী উপজেলার শাওন হোসেন ও তার স্ত্রী ঝর্ণা ওরফে কুলসুম বেগম, আবুল কালাম আজাদ, সান্ত্বনা ও শান্তি।
আহতদের মধ্যে ১৫ যাত্রীকে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বরিশাল মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ১০ যাত্রীর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাত ৮টায় বরিশাল পুলিশের একটি ট্র্যাকার ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রাত সাড়ে ৯টায় এটি উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা বরিশালগামী রূপম পরিবহনের একটি বাস (টাঙ্গাইল-জ-০৪-০১১৫) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিশ্বাসবাড়ী এলাকায় একটি খালে পড়ে যায়। খালে পড়ার সময় বাসটি ওই খালের ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজের পিলারের সাথে ধাক্কা লেগে দুমড়েমুচড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করেন। উদ্ধারকাজে এলাকাবাসীও যোগ দেন। এ ঘটনায় আটজন নিহত ও প্রায় ৩০ যাত্রী আহত হন। আহতদের রাজাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বিভিন্ন ক্লিনিক ও বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত যাত্রী ববিতা, একরাম, এশরাত জাহান, আশিক, প্রিয়াঙ্কাসহ অনেকে জানান, গাড়িটি দুর্ঘটনায় পড়ার আগে সামনের চাকা পাংচার হয়ে যায়। এতে নির্মাণাধীন ব্রিজের কাছাকাছি এলে গাড়িটি বাঁ পাশের সংযোগ সড়কে যেতে না পেরে নির্মাণাধীন ব্রিজের পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে খালে পড়ে যায়। এতে ওই ব্রিজের নির্মাণ শ্রমিকরাও চাপা পড়েন।
যাত্রীরা জানান, নির্মাণাধীন ব্রিজের পিলারের সাথে ধাক্কা খেয়ে বাসটির সম্মুখভাগ দুমড়েমুচড়ে যায়। আহত যাত্রীদের আর্তনাদে প্রথমে স্থানীয়রা উদ্ধারকাজ শুরু করলেও পরে ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের পৃথক দুটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল একে একে উদ্ধার করে নারী-শিশুসহ আট যাত্রীর মরদেহ। তাদের মধ্যে ছয়জনের নাম নিশ্চিত করেছে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীল সূত্র।