আড়াল হওয়া দুজনের প্রবাসে পাড়ি জমানোর পাঁয়তারা

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার স্কুলছাত্রী তাহেরা হত্যা মামলার তদন্ত ডিবিতে নিতে চান বাদী

 

স্টাফ রিপোর্টার: তাহেরা হত্যা মামলার তদন্তে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না মামলার বাদী তথা তার পিতা। তিনি মামলার তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওপর দিতে চান। সে লক্ষ্যে শিগগিরই তিনি পুলিশ সুপারের নিকট আবেদন করতে পারেন। এরকমই মন্তব্য করে মামলার বাদী শাজাহান আলী বলেছেন, ডিবি পুলিশে মামলার তদন্ত নেয়া না গেলে সিআইডির ওপর তদন্তভারের জন্য আবেদন জানানোর কথা ভাবতে হবে।

এদিকে তাহেরা হত্যার পর শুধু বাড়ি মালিকের ছেলে বাচ্চুই আত্মগোপন করেনি, এলাকার আরো কয়েক যুবককে প্রকাশ্যে দেখা মিলছে না। তাদের দুজন প্রবাসে পাড়ি জমানোর জোর তৎপরতা শুরু করেছে বলে একাধিকসূত্র জানিয়েছে। অপরদিকে তাহেরার এক বান্ধবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছে, কিছুদিন আগে তাহেরাসহ আমরা কয়েকজন আটকপাটে বেড়াতে গেলে ওই বাচ্চু মোবাইলফোনে গোপনে ছবি তোলে। ওই ছবি তুলে বাচ্চু ব্লাক মেইলিং করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। দীর্ঘদিন ধরেই বাচ্চু নানাভাবে তাহেরা খাতুনকে উত্ত্যক্ত করতো। ঘরে উঁকিঝুঁকি মারতো বলেও তাহেরা তার ওই বন্ধবীকে জানিয়েছিলো।

আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী তাহেরা খাতুনকে গত ৯ ডিসেম্বর দুপুরে তাদের ভাড়ায় নেয়া বাসায় হত্যা করা হয়। হত্যার পরও পাশবিক নির্যাতন করা হয়। লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় সিলিং ফ্যানের সাথে। পরদিন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত সংশ্লিষ্টসূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছে, এ ধরনের নৃশংস হত্যা এবং হত্যার পর পাশবিক নির্যাতনের আলামত আমাদের চমকে দিয়েছে। ধর্ষণসহ কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে উপকরণ প্রেরণ করা হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলেই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পুলিশকে দেয়া হবে। অপরদিকে কে বা কারা গত দু দিন ধরে আলমডাঙ্গায় ময়নাতদন্তে হত্যার আলামত পাওয়া যায়নি বলে গুজব ছড়িয়েছে। এ গুজবের হেতু নিয়ে অনেকেই নানা মন্তব্য করে মামলার তদন্তে পুলিশ সুপারের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেছে, আলমডাঙ্গা থানার ওপর শুধু মামলার বাদীরই আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়নি, ন্যায়বিচার প্রত্যাশীদের মাঝেও বিরূপ ধারণা ফুটে উঠতে শুরু করেছে।

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ তাহেরা হত্যা মামলায় তার গৃহশিক্ষক রাশেদকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। রাশেদ পাইলট মাধ্যামিক বালিকা বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল বিষয়ক শিক্ষক। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলেও তার সহকর্মীদের মধ্যে রাশেদ তেমন সন্দেহভাজন নয়। কয়েকজন সহকর্মী বলেছেন, ঘটনার দিন রাশেদ বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। দুপুর একটার পর তিনি বিদ্যালয় থেকে ফিরেছেন। পুলিশকে তার সম্পর্কে আরো তথ্য নেয়া উচিত।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়ার শাহজাহান দীর্ঘদিন ধরে আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের আনন্দধামপাড়ার আব্দুল কাদের দোতলাবাড়ির নিচতলার দুটি ঘর ভাড়ায় নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। ওই বাড়িতে দুপুরে একা থাকাকালে হত্যার শিকার হয় তার বড় মেয়ে তাহেরা খাতুন।

Leave a comment