মৌলবাদ নির্মূল করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার অঙ্গীকার
স্টাফ রিপোর্টার: যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে প্রাথমিকভাবে যে কাজ শুরু হয়েছে মৌলবাদকে নির্মূল করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ে তা পূর্ণতা দেবার অঙ্গীকার জানিয়ে পালিত হলো শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলার বিজয়ের ঊষালগ্নে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দোসরদের সহায়তায় এ দেশের যে মেধাবী সন্তানদের হত্যা করেছিল, সেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছে দেশবাসী।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে প্রাথমিকভাবে যে কাজ শুরু হয়েছে মৌলবাদকে নির্মূল করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ে তা পূর্ণতা দেবার অঙ্গীকার জানিয়ে পালিত হলো শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলার বিজয়ের ঊষালগ্নে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দোসরদের সহায়তায় এ দেশের যে মেধাবী সন্তানদের হত্যা করেছিল, সেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছে দেশবাসী।
যথাযোগ্য মর্যাদায় গতকাল দেশজুড়ে সবাই শ্রদ্ধা জানালো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। শোকসন্তপ্ত লাখো মানুষের স্রোত এসে মিলেছিল স্মৃতিসৌধে। আবালবৃদ্ধবনিতা শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি মৌলবাদ ও প্রতিক্রিয়াশীল চক্রকে প্রতিহত করার আহ্বান জানান। ভোর থেকেই মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ আর রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে মানুষের ঢল নেমেছিল।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ শহীদদের স্মরণে বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। সকাল ৮টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহীদ বেদীর সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। শহীদদের সম্মানে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। পরে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে নিয়ে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকসহ দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সকাল ৭টার দিকে দলীয় পতাকা জাতীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা ও দোয়ার মহাফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনাসভা ও দোয়ার মহাফিলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চুয়াডাঙ্গা-১ সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, অ্যাড. সামসুজ্জোহা, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আশাদুল হক বিশ্বাস, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদুল হক লিটু বিশ্বাস, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন পেদু, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আফাজালুল হক, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা খাতুন পলি, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আরেফিন আলম রনজু, যুগ্মআহ্বায়ক আসাদুজ্জামান কবীর, জেলা যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের, গোলাম মোস্তফা লালা, সিরাজুল ইসলাম আসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রশীদ মাসুম, জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি রুবাইদ বীন আজাদ সুস্তির, সদর থানা ছাত্রলীদের সাধারণ সম্পাদক সুমন রেজা, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশিক ইকবাল স্বপন, সাধারণ সম্পাদক তানিম হাসান তারেক প্রমুখ।
অপরদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা বিএনপির কেদারগঞ্জস্থ কার্যালয়ে গতকাল সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টার দিকে দোয়া ও আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস। আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, মজিবুল হক মালিক মজু, সদস্য রউফুন নাহার রিনা, এম জেনারেল ইসলাম, আবু, সিদ্দিক আবু, রবিউল ইসলাম বাবলু, আবু আলা শামসুজ্জামান, জেলা বিএনপির নেতা মাহমুদুল হক পল্টু, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী মাসুদ জোয়ার্দ্দার বাবু, জেলা যুবদল নেতা সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজিব খান, শাহজাহান খান, জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক বকুল, জেলা ওলামা দলের নেতা মাও. আনোয়ার হোসেন, পৌর মহিলা দলের সাধারণ সম্পা রহিমা খাতুন প্রমুখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুন বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রক্তের ঋণ আমরা আজও শোধ করতে পারিনি। তিনি আরো বলেন, আজ ক্ষমতাসীনরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুণ্ঠন চালাচ্ছে।
মাসুদ অরুন গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা ইলিয়াস হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এমএকে খাইরুল বাশার, উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল হক মাস্টার, জেলা কৃষকদলের সভাপতি আব্দুর রব মাস্টার, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
মহান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চুয়াডাঙ্গা জেলা সংসদের উদ্যোগে গতকাল সন্ধ্যায় আলোকবর্তিকা হাতে এক মৌন মিছিল উদীচী কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ চত্বরে অবস্থিত চুয়াডাঙ্গা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ হয়। আলোর পথযাত্রী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে …, ও আলোর পথ যাত্রী……, মুক্তির মন্দির সোপানতলে……’ সঙ্গীত পরিবেশনের পর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ করা হয়। পরে সমবেত সমাবেশের উদ্দেশে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে আলোচনা করেন উদীচী জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক জহির রায়হান ও সহসভাপতি লুৎফর রহমান।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়েছে। দর্শনায় পৃথক পৃথকভাবে দিবসটি পালন করেছে আ.লীগ। দিনব্যাপি আয়োজনের মধ্যে ছিলো স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, শোক ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, র্যালি, মানববন্ধন এবং আলোচনাসভা। সকালে উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে দর্শনা সরকারি কলেজ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান। দর্শনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শ্যামল কুমার সাহার সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন- দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, যুগ্মসম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম। দর্শনা রেল বাজারের ফুলতলা চত্বর থেকে সন্ধ্যায় একটি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ৱ্যালি বের করা হয় দর্শনা পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে। র্যালিটি দর্শনা সরকারি কলেজ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন নেতৃবৃন্দ। পরে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন- মতিয়ার রহমান, সৈয়দ মজনুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ওমর আলী, আতিয়ার রহমান হাবু, ইদ্রিস আলী, মুন্সি সিরাজুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম হুকুম, খালিদ হোসেন মিঠু প্রমুখ।
একই সময় দর্শনা পৌর আ.লীগের পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও মানববন্ধন করা হয় আ.লীগ কার্যালয়ের সামনে। এক মিনিট নীরবতা শেষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনাসভা। এ সভায় আলোচনা করেন- পৌর আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম, উপজেলা আ.লীগের যুগ্মসম্পাদক, ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম, আ.লীগ নেতা আলী মুনসুর বাবু, হবা জোয়ার্দ্দার, যুবলীগ নেতা আ. হান্নান ছোট, আজিজুর রহমান বাবু, ইকবাল হোসেন, শাজাহান মোল্লা, মহিউদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম ববি, নাহিদ পারভেজ, তোফাজ্জেল হোসেন তপু, আলামিন, প্রভাত প্রমুখ।