মাথাভাঙ্গা মনিটর: যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাঙালিদের সহযোগিতা চেয়েছেন শেখ রেহানাকন্যা টিউলিপ সিদ্দিক। বৃটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে এমপি পদে নিজের তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে এ সহযোগিতা চান তিনি। বঙ্গবন্ধুর এ নাতনি বলেন, নানা ও খালার মতো এবার আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনারা সারা জীবন আমাদেরকে সমর্থন করেছেন। আমার মা, খালা ও নানাকে সহযোগিতা করেছেন। তাই আমি আশা করছি, এবার বৃটিশ এমপি পদে নির্বাচনে আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। রোববার পূর্ব লন্ডনের ইম্প্রেশন ইভেন্ট ভেন্যুতে নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের এই ভোজসভায় বৃটেনের বিভিন্ন শহরের প্রায় পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশী উপস্থিত হন। টিউলিপ বলেন, অভিবাসীরা বৃটেনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তবুও অভিবাসীদের নিয়ে নানা নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বৃটেনের নিম্নবিত্ত মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত ও অভিবাসনসহ বিভিন্ন বিষয়ে লেবার পার্টির বিকল্প নেই। তাই বৃটেনে আমরা আবার লেবার পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চাই। এড মিলিব্যান্ডকে আমরা প্রধানমন্ত্রী বানাতে চাই। বৃটেনের আগামী জাতীয় নির্বাচনে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ক্যামডেন বারার কাউন্সিলর টিউলিপ সিদ্দিক। এক সময়ের বিখ্যাত অভিনেত্রী গ্লেন্ডা জ্যাকসন ১৯৯২ সাল থেকে এই আসনটিতে টানা এমপি নির্বাচিত হয়ে আসছেন। বার্ধক্যের কারণে এবার তিনি এই আসন ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন। পরে লেবার পার্টির প্রায় ৯শ’ সদস্যের সরাসরি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর স্যালি গিমসন ও হ্যাকনি কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র সোফি লিন্ডেনকে পরাজিত করে মনোনয়ন লাভ করেন টিউলিপ। ২০১৫ সালের ৭ই মে পার্লামেন্ট নির্বাচনে কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী সায়মন মার্কাসের সঙ্গে লড়বেন তিনি। নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে নির্বাচিত প্রথম বৃটিশ-বাংলাদেশী এমপি রুশনারা আলী। তিনি টিউলিপের প্রশংসা করে বলেন, সে কঠোর পরিশ্রমী ও মেধাবী। লেবার পার্টি সরকার গঠন করলে তাকে মন্ত্রিসভায় দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অনুষ্ঠানে টিউলিপের স্বামী ক্রিশ্চিয়ান জন পার্সি ক্রিস ও ক্যাম্পেইন টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ভোজসভা শেষে তহবিল সংগ্রহের জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ী মৃদুল কান্তি দাসের দানকৃত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের স্বাক্ষর সংবলিত একটি ব্যাট নিলামে বিক্রি করা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশী খন্দকার মাশরুর হোসেন ৩০০০ পাউন্ডে ব্যাটটি কেনেন। ১৯৮২ সালে জন্মগ্রহণকারী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশ, ব্রুনেই, ভারত, সিঙ্গাপুর ও স্পেনে বাল্যকাল কাটিয়েছেন। তিনি ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন হতে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও কিংস কলেজ অব লন্ডন হতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১০ সালের মে মাসে ক্যামডেন রিজেন্ট পার্ক ওয়ার্ডের প্রথম বাঙালি মহিলা কাউন্সিলার নির্বাচিত হন। টিউলিপ সিদ্দিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন, লেবার লিডার এড মিলিবান্ডের ক্যাম্পেইনে কাজ করেছেন। এছাড়া এমপি টিসা জোয়েলের পলিসি এডভাইজার, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, সেভ দ্য চিলড্রেন, বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের সাবেক লেবার এমপি ওনা কিং, টুটিং এলাকার লেবার এমপি ও সাবেক মন্ত্রী সাদেক খান, লেইটন ওয়ানস্টেড এলাকার সাবেক লেবার এমপি হ্যারি কোহেনের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।