প্রত্যাশা মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র সিলগালা : পরিচালককে জরিমানা

মাদকাসক্ত নিরাময়ে চিকিৎসার বদলে নির্যাতন : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত

 

স্টাফ রিপোর্টার: অবশেষে চুয়াডাঙ্গা জাফরপুর বিজিবি ক্যাম্পের নিকটস্থ প্রত্যাশা মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। অনুমোদনহীনভাবে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার নামে প্রতারণার দায়ে প্রত্যশা মদাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক খালেছুর রহমান খানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডাদেশসহ কেন্দ্রটি স্থায়ীভাবে বন্ধের আদেশ দেয়া হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এ আদেশ দেন।

DSC07813

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের জাফরপুস্থ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দফতরের ১ নং গেটের সামনে সম্প্রতি গড়ে তোলা হয় মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র। নাম দেয়া হয় প্রত্যাশা মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র। মেহেরপুর মল্লিকপাড়ার মৃত মোনাজত খানের ছেলে খালেছুর রহমানসহ চুয়াডাঙ্গা সিনেমাহলপাড়ার সোহেল রানা, জাফরপুরের কামরুজ্জামান বিপ্লব ও মাসুদ রানা কেন্দ্রটি পরিচালনা করে আসছিলেন। গত ১ ডিসেম্বর রাতে এ কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন চুয়াডাঙ্গা শেখপাড়ার হেলাল উদ্দীন মারা যান। পরদিন ভোরে মৃত অবস্থায় সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হেলালের পরিবার ও মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে বলা হয় হেলাল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। অবশ্য কেউ কেউ এ মৃত্যুর আড়ালে রহস্য নিহিত রয়েছে বলে মন্তব্য করলেও পুলিশ তেমন কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।

গতকাল শনিবার বিকেলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অদিধফতরের চুয়াডাঙ্গার পরিচালক মিলন কুমার মুখার্জির সহযোগিতায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনিবুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় প্রত্যাশা মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক খালেছুর রহমান খান অনুমোদনসহ প্রয়োজনীয় কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। একজন চিকিৎসক সপ্তায় একদিন চিকিৎসা দেন বলে দাবি করা হলেও যে চিকিৎসকের নাম বলা হয় তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই প্রশিক্ষণে থাকার তথ্য পান আদালত। উপস্থিত সাক্ষ্য প্রমাণের প্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত কেন্দ্রটির অন্যতম পরিচালক খালেছুর রহমান খানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন। জরিমানার টাকা সাথে সাথে পরিশোধ করায় তাকে আর কারাগারে যেতে হয়। তবে কেন্দ্রটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রে ফার্মপাড়ার রূপম, লিটন, জাফরপুরের হাফিজুল, জয়রামপুরের আনারুল, মুন্সিগঞ্জের ইউসুব ও অজ্ঞাত ঠিকানার আমানত চিকিৎসাধীন ছিলেন। এদের নিকটজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এ সময় রুপমসহ অন্যরা বলেছেন, কেন্দ্রে চিকিৎসার নামে নির্যাতন করা হতো। হেলাল কী কারণে কীভাবে মারা গেছে তা অবশ্য বলতে পারবো না। তবে তাকেও নির্যাতন করা হয়েছে।