মাথাভাঙ্গা মনিটর: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্যতম সন্দেহভাজন জঙ্গি সংগঠন জেএমবির শাহনুর আলমকে গত শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। গুয়াহাটির স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের সদর দফতরে এনে জেরা করা হচ্ছে তাকে। শাহনুরের হদিস পেতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলো। একটি বার্তা সংস্থার খবরে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার সহায়তায় আসামের নলবাড়ি থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সন্দেহভাজন এ অর্থ প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়।
এনআইএ সূত্রে খবর, গোয়ালপাড়া থেকে দাঁতের ডাক্তারি শিখে বরপেটার চটলা গ্রামে চিকিৎসা করতেন শাহনুর। আড়ালে তিনি, তার স্ত্রী সুজানা বেগম ও ভাই জাকারিয়া জামাত-উল-মুজাহিদিনের হয়ে কাজ করতেন। বিদেশ থেকে আসা হাওয়ালার টাকা শাহনুর এ রাজ্যে নিয়মিত পাঠাতেন বলে গোয়েন্দা সদস্যরা জানতে পারেন। তার স্ত্রী শিমুরালির মাদরাসায় প্রশিক্ষণ নিয়ে চটলার মাদরাসায় মেয়েদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতেন বলেও জানা যায়।
বর্ধমান বিস্ফোরণে আসামের যোগসূত্র মেলার পরেই দু সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে চটলার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান শাহনুর। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে তিনি বাবা মুজিবর আলমের বাড়িতে ওঠেন। পরে নলবাড়ির মুকালমুয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়ি ৮টি বাক্সে সমস্ত নথিপত্র পুঁতে রেখে পালিয়ে যান। বরপেটা নলবাড়ি থেকে জেহাদি যোগের অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
৬ নভেম্বর রাতে গুয়াহাটির বাস টার্মিনাল থেকে দেড় বছরের সন্তানসহ ২২ বছরের সুজানাকে ধরে পুলিশ। তাকে জেরা করে মুকালমুয়ায় শাহনুরের আত্মীয়ের বাড়িতে পুঁতে রাখা নথির হদিস মেলে। মাঝে শাহনুরকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে তার সম্পর্কিত দু ভাইকে গ্রেফতার করেও পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এরপর একবার মেঘালয়, আর একবার ধুবুরির নামাসেরসো গ্রামে পুলিশ হানা দিলে হাত ফসকে পালিয়ে যান শাহনুর। দিন কয়েক আগে পুলিশ খবর পায়, মুকালমুয়ার লারকুচি গ্রামে চার দিন ধরে শাহনুর গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। গোয়েন্দাদের কাছে যে ছবি ছিলো তাতে শাহনুরের দাড়ি ছিলো। কিন্তু মুকালমুয়ায় গা ঢাকা দেয়া ব্যক্তির দাড়ি ছিলো না। তাই সে শাহনুর কি-না, নিশ্চিত হতে দিন দু সময় নেয় পুলিশ। এদিন সন্ধ্যায় আসাম পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিশেষ অপারেশন ইউনিট ওই গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
এর আগে যেভাবে শাহনুর দু’বার নজর এড়িয়ে পালিয়েছিলেন এবং গুয়াহাটির পাশেই নলবাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন, তাতে পুলিশের সন্দেহ, এলাকারই কারো সমর্থন তিনি পেয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের পরে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন গোয়েন্দা সদস্যরা।