কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানুয়ারির শেষের দিকে

নির্বাচনের মাঠ ঝালিয়ে নিচ্ছে প্রার্থীরা

 

হারুন রাজু/হানিফ মণ্ডল: কেরুজ দ্বিবার্ষিক শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচন বরাবরই আলোড়ন সৃষ্টি করে থাকে। এ নির্বাচনের বাতাস শুধু দর্শনা শহরেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এ বাতাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা জেলায়। প্রার্থীদের দৌড়-ঝাঁপ, প্রচার-প্রচারণা নির্বাচনের আমেজ বাড়িতে তোলে। এখনো পর্যন্ত সাধারণসভার দিনক্ষণ ঠিক না হলেও প্রার্থীদের দলবদ্ধ মহড়ায় শহরবাসীকে মনে করিয়ে দিচ্ছে কেরুজ নির্বাচনের কথা। কেরুজ এলাকায় হিড়িক পড়ে গেছে কর্মীসভার। এ নির্বাচনে কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ভোটারের তুলনায় বহিরাগতদের উপস্থিতি বেশি লক্ষণীয়।

জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২০ জানয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিলো কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের নির্বাচন। সে হিসেব অনুযায়ী আগামী বছরের জানুয়ারি মাসেই নির্বাচিত হবে নির্বাচন। জানুয়ারি শুরুতে সাধারণসভার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে। সাধারণসভা থেকেই নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হবে। এদিকে কেরুজ চিনিকলের ২০১৪-১৫ আখ মাড়াই মরসুমের যাত্রা শুরু হবে আগামী ৫ জানুয়ারি। মিলের যাত্রা শুরুর আগেই নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রার্থীদের যাত্রা শুরু হয়েছে বেশ আগে-ভাগেই। বরাবরের মতো এবারো সাধারণসভায় এক পক্ষ ওপর পক্ষকে কথার তীরে ঘায়েল করার প্রস্তুতি নিয়েছেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। কেরুজ চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। ভোটে জিততে এখন থেকেই মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রার্থীরা। শীতকে উপেক্ষা করে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিচ্ছে প্রার্থীরা। দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতির ঝুলি। নির্বাচিত হলে সকলের দাবিই পূরণের আশ্বাসের কথা নতুন কিছু নয়। পুরাতন হলেও সকলকেই তালিকার ১ নম্বরে রাখছেন প্রার্থীরা। প্রশ্ন উঠেছে সকলেই তালিকার ১ নম্বরে থাকলে তালিকার পরের নম্বরগুলোতে কারা? আসলে কেরুজ নির্বাচন মানেই চাওয়া-পাওয়া আর পাওয়া না পাওয়ার ক্ষোভ। এ ক্ষোভকে পুঁজি করেই সাধারণ ভোটারদের মধ্যে দল বদলের পালার ঘটনা তো অনেক পুরোনো। মিটিং, মিছিল, সভা-সমাবেশ, মোটরসাইকেল শো-ডাউনে সরগম অবস্থায় পরিণত হয়েছে কেরুজ আঙিনা।

গত নির্বাচনে কেরুজ চিনিকলের হিসাব, প্রশাসন ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যবিধান, ইমারত, সেনিটেশন, হাসপাতাল, চোলাই মদ কারখানা, ডিস্টিলারি, বিদ্যুত ও কারখানা, প্রকৌশলী, পরিবহন, ইক্ষু উন্নয়ন, ইক্ষু সংগ্রহ বিভাগসহ বাণিজ্যিক খামারের শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়ে সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ছিলো ১ হাজার ২৫৮ জন। অবাক হলেও সত্য একটি বাদে সব ভোটই পোল হয়েছিলো। ইউনিয়নের ২৫টি পদের বিপরীতে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পদ ২৫টি হলেও প্রার্থীর সংখ্যা ১শ পেরিয়ে যেতে পারে। আগামী নির্বাচনে ৫ জন সভাপতি, ৩ জন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছাড়াও বিভিন্ন পদের বিপরীতে রয়েছেন অসংখ্য প্রার্থী। অপ্রীতিকর কোনো একটি ঘটনার কারণে গত নির্বাচনের পরপরই চাকরিচ্যুত হয়েছেন নির্বাচিত সভাপতি আজিজুল হক। এছাড়া চাকরির মেয়াদপূর্ণ হওয়ার কারণে হয়তো তিনি এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। আজিজুল হকের শূন্যতা পূরণে তার ছেলে সবুজ মাঠে নেমেছেন। তিনি বাবার স্থান দখলে শুরু করেছেন নির্বাচনী প্রচারণা। এছাড়া সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে বরাবরের মতো যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, তৈয়ব আলী সংগঠনের কর্ণধর তৈয়ব আলী, সূর্যসেনা শ্রমজীবী সংগঠনের চেয়ারম্যান ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, ফারুক সংগঠনের কর্ণধর সাবেক সহসভাপতি ফারুক আহম্মেদ ও মোস্তাফিজুর সংগঠনের কর্ণধর সাবেক সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান। এবার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী পদে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন আরো একজন। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা হলেন- ইউনিয়নের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক প্রিন্স সংগঠনের কর্ণধর মনিরুল ইসলাম প্রিন্স, মাসুদ সংগঠনের কর্ণধর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ ও সদ্য আত্মপ্রকাশ করা বাবু সংগঠনের কর্ণধর আ. রব বাবু।

Leave a comment