অন্তিম শয়ানে দু মহীরুহ

স্টাফ রিপোর্টার: মাটি ও মানুষের শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। তার চিত্রসাধনায় ফুটে উঠেছিলো বাংলাদেশের রূপকল্প। শেষ কথা শুনতে না পারার আক্ষেপ নিয়েই এ মহান চিত্র জাদুকরকে বিদায় জানালো বাংলাদেশের মানুষ। গতকাল শহীদ মিনারে নানা মত আর পথের মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানান বরেণ্য এ শিল্পীর প্রতি। সুধী আর বিদগ্ধজনেরা স্মরণ করেছেন তার বর্ণময় জীবনের নানা অধ্যায়ের। পরে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। যেন মাটির ঘরেই ঠাঁই নিলেন মাটির মানুষ কাইয়ুম চৌধুরী। রোববার রাতে আর্মি স্টেডিয়ামে সঙ্গীত উৎসবে হঠাৎ মঞ্চ থেকে পড়ে যান কাইয়ুম চৌধুরী। কিছুক্ষণ পরেই জানা যায়, এ পৃথিবীর মায়া সাঙ্গ করেছেন এই চিত্রসাধক। কাইয়ুম চৌধুরীর মতোই আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব জগ্‌লুল আহ্‌মেদ চৌধূরীকে। গত শনিবার আকস্মিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান সদা হাস্যোজ্জ্বল প্রবীণ এ সাংবাদিক। সাংবাদিকতার পরিচয় ছাপিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক হিসেবেই যিনি খ্যাতিমান হয়ে উঠেছিলেন। গতকাল প্রিয় মানুষ জগ্‌লুল আহ্‌মেদ চৌধূরীকে চোখের জলে বিদায় জানান তার সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা। বনানী মসজিদে প্রথম ও জাতীয় প্রেস ক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার প্রতি সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানান। সন্ধ্যায় আজিমপুর নতুন কবরস্থানে মায়ের কবরে তাকে সমাহিত করা হয়।

শোকে-শ্রদ্ধায় প্রিয় শিল্পীকে বিদায়: শোকাহত ও অশ্রুসিক্ত জনতার বিনম্র শ্রদ্ধায় বিদায় নিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। গতকাল বাদ আসর তাকে আজিমপুর গোরস্তানে শ্বশুর খান মোহাম্মদ বদরুদ্দিনের কবরে সমাহিত করা হয়। এর আগে তার সাবেক কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। দুপুরে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অস্থায়ী মঞ্চে রাখা হলে ঢল নামে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে আসা বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের। শিল্পীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সোমবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান পর্বের আয়োজন করে। প্রায় আধা ঘণ্টা প্রিয় কর্মস্থলে রাখার পর ১১টা ৩৫ মিনিটে কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহ শহীদ মিনারের উদ্দেশে নিয়ে আসা হয়। ১১টা ৪৫ মিনিটে মরদেহ শহীদ মিনারে পৌঁছায়। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিশিষ্ট এ তৈলচিত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। সেখানে বাদ যোহর জানাযা হয়। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার আজিমপুরের বাসভবনে। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর স্থানীয় ছাপড়া মসজিদে দ্বিতীয় ও শেষ নামাজে জানাজা হয়। এরপর সমাহিত করতে নিয়ে যাওয়া হয় আজিমপুর গোরস্থানে। সেখানে বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে শ্বশুর খান মোহাম্মদ বদরুদ্দিনের কবরে সমাহিত করা হয় তাকে।

Leave a comment