নারী ও শিক্ষার্থীসহ আহত ১২
আলমডাঙ্গ ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার বেলগাছি মালিতাপাড়ায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে বোমা হামলায় অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিরা হলেন- মৃত জোয়াদ আলীর দু ছেলে ইজাল উদ্দিন (৫৫), নিজাম উদ্দিন (৫২) ইজালের স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন (৪০), মোয়াজ্জেম আলীর ছেলে আবদুল লতিফ (৪২), মঙ্গল আলীর ছেলে রানা হোসেন (১৮) আফসার মণ্ডলের দু ছেলে দেলোয়ার হোসেন দিলু (৩০) ও বিল্লাল হোসেন (৪০), আকমানের ছেলে খোকন (২৮), হোসনে আরা (৩৫) ও হাসান (১০) হেলাল উদ্দিনের স্কুলপড়ুয়া মেয়ে মুক্তা, আলী হোসেনের স্কুলপড়ুয়া ছেলে হাসান ও হায়দার আলীর স্কুলপড়ুয়া মেয়ে রুমি। আম্বিয়া খাতুনের কোমরে গেথে থাকা বোমার স্প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়।
তারা সবাই বেলগাছি মালিতাপাড়ার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে মহিলাসহ ছয়জনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ছয়জনকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিত্সা দেয়া হয়েছে। রাতে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, কারও পা আবার কারও পিঠ বোমার আঘাতে ঝলসে গেছে। আহত ব্যক্তিদের শরীরে অসংখ্য বোমার স্প্লিন্টার আছে। এগুলো বের করতে চিকিত্সকদের ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিত্সক সউদ কবীর মালিক জন সাংবাদিকদের জানান, সদর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছয়জনই শঙ্কামুক্ত।
আহত ইজাল উদ্দিনের ছেলে বিদ্যুত হোসেন বলেন, বেলগাছি গ্রামের মালিতাপাড়ার লালনের দোকানে গতকাল বিকেলে তাস খেলাকে কেন্দ্র করে মৃত রমজান আলীর ছেলে তুরাল ডাকাতের (৪৫) সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। সন্ধ্যার পর পর তুরাল ডাকাত বোমা হাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। বিদ্যুতকে খুঁজতে থাকে। বিষয়টি বুঝতে পেরে বিদ্যুত দৌড়ে পালায়। তুরাল ডাকাতও বোমা হাতে বিদ্যুতের পেছন পেছন দৌঁড়ে যেতে থাকে। সে সময় উপস্থিত সকলে তুরালের দিকে ছুটে গেলে তুরাল ডাকাত পেছনে ঘুরে দাঁড়িয়ে তার দিকে ছুটে আসা লোকজনের ওপর বোমা ছুড়ে মারে। প্রচণ্ড শব্দে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়।
পুলিশ ও গ্রামবাসী জানায়, বোমা হামলাকারী তোরাল বেলগাছি গ্রামের চিহ্নিত ডাকাত। বেশ কয়েকবার সে জেলও খেটেছে। সাম্প্রতি সে জেলমুক্ত হয়ে আবাও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। তুরাল ডাকাত মায়ের ওপর বোমাহামলাকারী বেলগাছি গ্রামে শীর্ষ সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান কালামের প্রধান সহযোগী বলে অভিযোগ তুলেছে গ্রামবাসী। গতকাল ওই বোমা হামলার পর আতঙ্কে রয়েছে গ্রামবাসী। গ্রামজুড়ে বিরাজ করছে ভূতুড়ে নীরবতা ও আতঙ্ক। সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান সঙ্গীয় ফোর্সসহ আলমডাঙ্গা থানার এসআই আনিস ও এএসআই সিরাজ।
এদিকে রাতে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে ঘটনাস্থল থেকে আলমডাঙ্গা থানার এসআই আনিসুর রহমান জানান, গত সোমবার রাতে গ্রামে তাস খেলাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের বিরোধ হয়। এর জের ধরে এ বোমা হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, বোমা হামলাকারী তোরাব হোসেন ওরফে তুরাল ডাকাত পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার নামে অসংখ্য অভিযোগ আছে।