ঝিনাইদহ অফিস: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষের নিজ উপজেলা ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সরকারি আইন ভঙ্গ করে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে সংযুক্তি বদলির নামে শিক্ষা কর্মকর্তারা অর্থবাণিজ্য করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দিলিপ কুমার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা সরকারের বদলি নীতিমালা কোনোরকম তোয়াক্কা না করে অর্থের বিনিময়ে ঢালাওভাবে সংযুক্তি বদলির আদেশ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় সদস্যরা স্থানীয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বিধি বহির্ভূতভাবে সংযুক্তি (ডেপুটেশন) বদলি নিয়ে ক্ষোভ এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সারা দেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের সকল প্রকার বদলি বন্ধ থাকার পরও ঘুষের বিনিময়ে সংযুক্তি বদলি চলছে। কোনোরকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১২ জন শিক্ষককে সংযুক্তি বদলির আদেশ দিয়েছেন জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার দিলিপ কুমার বণিক।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা গেছে, গত ৮ মে শৈলকুপার রতনহাট স্কুল থেকে লতিফা নাসরিন নামে এক শিক্ষককে বেআইনিভাবে শৈলকুপা পৌরসভার ললিত মহন ভুইয়া স্কুলে সংযুক্তি বদল করা হয়। গত ২৩ জুন শৈলকুপার ধাওড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অসিত কুমার বিশ্বাস নামে এক শিক্ষককে ১৮১/৩ নং স্মারকে একই উপজেলার চাঁদপুর সংযুক্তি বদলি করেন। গত ১৮ জুন মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর স্কুলের শিক্ষক শাহানাজ খাতুনকে ১৭১ নং স্মারকে মহেশপুর পৌরসভার বারইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর শৈলকুপা উপজেলার ত্রীবেনী স্কুল থেকে ৫৬৫ নং স্মারকে জান্নাত আরা খাতুন নামে এক শিক্ষককে একই উপজেলার কচুয়া স্কুলে সংযুক্তি বদলি করেন তিনি। গত ১০ সেপ্টেম্বর ৬ জন শিক্ষক থাকা শৈলকুপা উপজেলার শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নার্গিস আক্তার নামে এক শিক্ষককে ১২ জন শিক্ষক থাকা শেখপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৭৩/৪ নং স্মারকে বদলি করা হয়েছে। সরকারিভাবে পৌরসভার মধ্যে সব ধরনের সংযুক্তি বদলি বন্ধ থাকার পরও সব জেলায় হরহামেশাভাবে সংযুক্তি বদলি করে আইন ভঙ্গ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলিপ কুমার বণিক আর্থিক লেনদেনের কথা অস্বীকার করে বলেন, এ সব বদলির প্রস্তাব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে আসে। তারাই কোনো অনৈতিক লেনদেনের সাথে জড়িত থাকতে পারে। এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষ জানান, কি পরিস্থিতিতে বদল হয়েছে সেটি দেখার বিষয় আছে। তবে শিক্ষক কম থাকা স্কুলে জরুরি প্রয়োজনে বদলি করা যাবে। তিনি আরো জানান, ৫/৬ জন শিক্ষক থাকলে সেখানে আবার নতুন করে শিক্ষক দেয়া বেআইনি। মহাপরিচালকের নিজ জেলায় এ রকম বেআইনি বদলির ঘটনায় শিক্ষকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।