স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আফজালুল হক বারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে হরতালের দিন জামিন শুনানি করায় বারের সদস্য পদ স্থগিত, ওকালতনামা থেকে নাম কর্তন, আদালতের যাবতীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা এবং সংশ্লিষ্ট আদালতসমূহে অবহিতকরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের জরুরিসভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এমএম শাহজাহান মুকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন- জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাঈদ মাহমুদ শামীম রেজা ডালিম, সহসভাপতি মুনসুর উদ্দিন মোল্লা ও শহিদুল হক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তালিম হোসেন ও আহসান আলী। কার্যনির্বাহী সদস্য রবিউল হক, জামাল উদ্দীন, আনারুল হক, মাসুদুর রহমান, হুমায়ুন কবীর মামুন ও মাসুদ পাভেজ রাসেল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত আলমডাঙ্গা থানার জিআর ১৮১/১৪ নং মামলায় গত ৪ নভেম্বর পাঁচজন আসামির জন্য আইনজীবী আফজালুল হক জামিনের আবেদন করেন। জমিজমা সংক্রান্ত মামলাটির পাঁচজন আসামির বাড়ি আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামে। গত ৫ নভেম্বর মামলাটি শুনানি অন্তে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। মামলার আইনজীবী আফজালুল হক ওই দিনই বেলবন্ড আদালতে জমা দিলে আসামিরা জেলা কারাগার থেকে জামিন মুক্ত হন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এমএম শাহজাহান মুকুল স্বাক্ষরিত অ্যাডভোকেট আফজালুল হকের কাছে পাঠানো এক পত্র থেকে জানা গেছে, বারের ২০ বছরের ঊর্ধ্বকাল যাবত বিরাজমান সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অমান্য করে আফজালুল হক আদালতে জামিন শুনানি করেছেন। যা বারের প্রচলিত আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। সে কারণে কার্যনির্বাহী পরিষদের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বারের সদস্যপদ স্থগিত, ওকালতনামা থেকে নাম কর্তন, আদালতের যাবতীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একই সাথে পত্র পাওয়ার পর থেকে আদালতের কার্যক্রম থেকে সম্পূর্ণরুপে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এমএম শাহজাহান মুকুল স্বাক্ষরিত পত্রটি গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরেই অ্যাডভোকেট আফজালুল হকের কাছে অফিস পিওন দিয়ে পাঠানো হয়েছে এবং তিনি গ্রহণও করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট আফজালুল হক বলেন, জামিনযোগ্য ধারায় আসামিদের জামিনের আবেদন জমা দিলে জামিন শুনানি অন্তে পাঁচজন আসামিকে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন এবং ওই দিনই বেলবন্ড জমা দেয়া হয়। আসামিরা পরে জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বার তার বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার কপি তিনি পেয়েছেন এবং বারের সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার রয়েছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা আদালতের (আলমডাঙ্গা) জিআরও এএসআই আনিস জানান, গত ৪ নভেম্বর পাঁচজন আসামির জামিনের জন্য আইনজীবী আবেদন করেন। আদালত গত ৫ নভেম্বর জামিনের আদেশ দেন।