চুয়াডাঙ্গা জেলা ইটভাটা প্রস্তুত মালিক সমিতির মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক বললেন
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেছেন, সরকারি আইনের প্রতি প্রশাসন শ্রদ্ধাশীল। বিগত তিন বছর জরিমানা দিয়ে ফিক্সড চিমনির ইটভাটা চললেও বর্তমানে কোনোভাবেই ফিক্সড চিমনি চালানো যাবে না। ভাটামালিক সমিতি সহযোগিতা করলে আইনভঙ্গ করে কেউ কাঠ পুড়িয়ে ইটভাটা চালু করতে না পারেন সেজন্য প্রশাসন প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং মোবাইলফোনে চাঁদবাজদের ভয়ে চাঁদা না দিয়ে প্রশাসনকে জানাতে আহ্বান জানানো হয়। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত চুয়াডাঙ্গা জেলা ইটভাটা প্রস্তুত মালিক সমিতির সাথে মতবিনিময়সভায় জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন এসব কথা বলেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মল্লিক সাঈদ মাহবুব ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনজুমান আরা এবং জিগজাগ পদ্ধতির ভাটা মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, জেলা ইটভাটা প্রস্তুত মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান নান্নু, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লাভলু, মজিবর রহমান ও আসিরুল ইসলাম সেলিম বক্তব্য রাখেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ইটভাটা প্রস্তুত মালিক সমিতির নেতারা বক্তব্যে বলেন, সরকারের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ৫০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে জিগজাগ পদ্ধতির ইটভাটা তৈরি করেছি। এক বছর আগে ৮৬ জন ইটভাটা মালিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সরকারি নীতিমালা মেনে চলবে। এর মধ্যে ৩৩ জন মালিক জিগজাগ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন এবং যারা লাইসেন্স গ্রহণ করেনি তারা শিগগিরই লাইসেন্সের কার্যক্রম শেষ করবে। অথচ কিছু ভাটামালিক কাঠ পুড়িয়ে ইট প্রস্তুত করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ সকল ইটভাটার যেমন লাইসেন্স নেই, তেমনি কাঠ পুড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। তাই এসব অবৈধ ইটভাটা যাতে চালু হতে না পারে সেজন্য প্রশাসনকে যথাযথ ভূমিকা পালনের দাবি জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন তার বক্তব্যে আরো বলেন, সরকারি আইন মেনে ২৩টি ইটভাটা জিগজাগ পদ্ধতির আওতায় রয়েছে। বাকি ইটভাটার লাইসেন্স ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। সেইগুলো যাতে চলতে না পারে সেজন্য ইউএনওদেরকে চিঠি দেয়া হয়েছে। অনেকে নিয়ম না মেনে ভাটা শুরু করার চেষ্টা করছে। লাইসেন্স না থাকা ও কাঠ পোড়ানো দুটিই অপরাধ। কেউ যেন আইন ভঙ্গ করে কাঠ পোড়াতে না পারেন সেজন্য ভাটা মালিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। বর্তমানে যে আইন আছে তা বাস্তবায়ন করতে পারি। কেউ যেন কৃষি জমিতে ইটভাটা তৈরি না করে। যেগুলো তৈরি হয়েছে এ মুহূর্তে উচ্ছেদ করা হবে না। কেউ নতুন ভাটা করতে চাইলে কৃষি জমিতে করতে পারবেন না।
ইটভাটা মালিকদের কাছে মোবাইলফোনে চাঁদাবাজদের বিষয়ে জেলা প্রশাসক আরো বলেন, চাঁদাবাজদেরকে ভয় না পেয়ে মোবাইল নম্বরটি জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও র্যাবকে জানিয়ে সাহায্য নিতে পারেন। ভয় পেলে ভয় দিনদিন বাড়তে থাকবে। আপনারা সাহসী হলে এর থেকে রেহাই পাবেন। রাতে টহল ব্যবস্থা করেছি এবং ভাটামালিকদের নিজস্ব টহল ব্যবস্থা রাখা দরকার।