চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি বেড়েছে। জেহালার ছোটপুটিমারী গ্রামে সশস্ত্র ডাকাতির সপ্তা না ঘুরতেই বোমা মেরে একজনকে খুন করা হয়েছে। একের পর এক ডাকাতি, বোমা মেরে খুনসহ মোবাইলফোনে খুনের হুমকি এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে বলে অভিযোগ। মাদকচক্রের অপতৎপরতা তো রয়েছেই। সন্ত্রাস-মাদক একই সুতোয় গাঁথা।
এক সময়ের সন্ত্রাস কবলিত হিসেবে চিহ্নিত চুয়াডাঙ্গার ভয়াবহ জনপদের নাম আলমডাঙ্গা। দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের লাগাতার অনমনীয় অভিযানে বাঘা বাঘা সন্ত্রাসীদের পতন ঘটেছে। স্বস্তি ফিরেছে শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষের মাঝে। দীর্ঘদিনের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে মুক্তির স্বস্তি যেন ক্ষণিকের হতে বসেছে। অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা এলাকাবাসীর চরম দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতপরশু মধ্যরাতে বোমা মেরে প্রবাসী দু সহোদরের বৃদ্ধ পিতাকে খুন করার পর পুলিশ নিশ্চয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করবে না। যদিও সেই অপ্রতুলতা অজুহাতেই আড়াল হবে কর্তব্যে অবহেলার দায়।
গ্রামবাংলার বহু পুরুষ বিদেশের মাটিতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠায়। শ্রম বিকিয়ে পাওয়া বৈদেশিক মুদ্রায় শুধু তার পরিবারের দরিদ্রতার কষাঘাতই দূর হচ্ছে না, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চাঙ্গা রাখতে সহায়ক হচ্ছে। আর দেশের দুর্বৃত্তরা হুমকি ধামকি দিয়ে কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়েই শুধু নিচ্ছে না, খুনও করছে। বিদেশে যারা পরিশ্রম করে দেশে অর্থ পাঠাচ্ছেন তাদের রেখে যাওয়া পরিবারের সকল সদস্যের বিশেষ নিরাপত্তা তো দূরের কথা, ডাকাতি হলেও ডাকাত ধরতে পুলিশের তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের ছোটপুটিমারী গ্রামের সৌদি প্রবাসীর পিতা আজিজুল খন্দকারের বাড়িতে সশস্ত্র ডাকাতির পর পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হলে সপ্তা না ঘুরতেই মালয়েশিয়া দুপ্রবাসী সহোদরের পিতার বাড়িতে কি বোমা হামলার ঘটনা ঘটতো?
একের পর এক ডাকাতি, ছিনতাই ও গণহারে চাঁদাবাজি শুধু আলমডাঙ্গার পল্লি জনপদে নয়, পার্শ্ববর্তী এলাকাতেও কমবেশি হচ্ছে। এক সময়ের সন্ত্রাস কবলিত জনপদে নতুন করে অঞ্চলভিত্তিক খুদে সন্ত্রাস গ্যাং গড়ে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের দায়িত্বশীল কর্তাদের আরো কতর্ব্যপরায়ন হওয়া প্রয়োজন। পুলিশের কর্তব্যে অবহেলা অপরাধীদের উসকে দেয়।