স্টাফ রিপোর্টার: পরকীয়ায় বাধা পেয়ে শাহ আলম (২৬) নামে এক ব্যক্তির দু পায়ে গুলি করে সন্ত্রাসী সাজানোর অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার এসআই আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে থানা থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। গুলিবিদ্ধ শাহ আলম এক সময় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের গাড়িচালক ছিলেন।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলা এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে গতকালই শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মমিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ থানার নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইন্সপেক্টর গণেশ বিশ্বাসকে। রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহ আলম বলেছেন, প্রায় দু বছর আগে এসআই আনোয়ার হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। ওই সময় তিনি ওই থানার সিভিল টিমের গাড়ি চালাতেন। শাহ আলম জানান, মোহাম্মদপুর থানায় কর্মরত অবস্থায় আনোয়ারের সাথে তার ঘনিষ্ঠতা হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে আনোয়ার ওই সময় শাহ আলমের মোহাম্মদপুর বাঁশবাড়িয়ার ভাড়া বাসায় একাধিকবার গেছেন। বাসায় যাতায়াতের একপর্যায়ে তার স্ত্রী শান্তার সাথে আনোয়ারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু শুরুতে তিনি বিষয়টি আঁচ করতে পারেননি।
চিকিৎসাধীন শাহ আলমের ভাষায়, বছরখানেক আগে আনোয়ারের সাথে পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পেরে তিনি শান্তাকে মারধর করেন। এর পর শান্তা তার আড়াই বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে একদিন উধাও হয়ে যান। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এসআই আনোয়ারের ভাড়ায় নেয়া বাসায় স্ত্রী রয়েছে। শাহ আলম কেরানীগঞ্জে গিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি জানান। মীমাংসার কথা বলে এসআই আনোয়ার হোসেন রোববার পরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে শাহ আলমকে মোহাম্মদপুর বাঁশবাড়িয়া এলাকা থেকে কৃষি মার্কেট এলাকায় ডেকে নেন। সেখানে যাওয়ার পরপরই আনোয়ার তার চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তোলেন। এরপর আগারগাঁও তালতলা এলাকায় নিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে হাতকড়া পরা অবস্থায় আনোয়ার তার দু পায়ে গুলি করেন। অন্যদিকে এ ঘটনার পর এসআই আনোয়ার হোসেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান, রোববার রাতে তিনি তালতলা এলাকায় ডিউটিতে ছিলেন। এ সময় খবর পান, একদল দুর্বৃত্ত সেখানে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি তাদের চ্যালেঞ্জ করলে দুর্বৃত্তরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশের পাল্টা গুলিতে শাহ আলম আহত হয়ে ধরা পড়ে। শাহ আলমের কাছ থেকে একটি গুলিভর্তি পিস্তল উদ্ধার করারও দাবি জানান আনোয়ার। অপরদিকে ঘটনার পরদিন সন্ধ্যায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন করে বলেন, প্রকৃত ঘটনাটি জানা পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তাকে। অতিরিক্ত উপকমিশনার ও একজন সহকারী কমিশনারকে ঘটনা তদন্ত করে। মঙ্গলবার তদন্ত প্রতিবেদনে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এসআই আনোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই মামলায় বুধবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।