স্টাফ রিপোর্টার: বিনামূল্যের পাঠ্যবই নিয়ে নাশকতার আশঙ্কা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামি শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যের বই নির্বিঘ্নে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে নিরাপত্তা চেয়ে ইতোমধ্যে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। ২০১০ সালে তেজগাঁওয়ের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) গুদামে বিনামূল্যের পাঠ্যবইয়ে আগুন লাগার পর নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে আসে। ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আগুনের নেপথ্যে নাশকতা হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, ইবতেদায়ী, মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), দাখিল এবং কারিগরি পর্যায়ের বিনামূল্যের প্রায় ৩০ কোটি বই ছাপার কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে প্রাথমিকের চার রঙের বইয়ের সিংহভাগ ভারতীয় মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানে ছাপানো হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় থেকে ৭টি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, বই গুদামজাতকরণ এবং পরিবহনের জন্য সহায়তা চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশেষ করে এনসিটিবির টঙ্গী ও তেজগাঁওয়ের গুদামসহ জেলা উপজেলা পর্যায়ে বইয়ের গুদামে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও কোনো ধরণের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড এড়াতে i¨ve, পুলিশ ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ করা হয়। অপর চিঠিতে ছাপার কাগজ ও পাঠ্যপুস্তক বহনকারী ট্রাক দিনে ও রাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে চলাচলের অনুমতিও চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণের পূর্ব পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট সব জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আঞ্চলিক উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা দিতে বিভাগীয় কমিশনার ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আলাদা চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবের কাছে পাঠনো এক চিঠিতে ঢাকা শহরে বিনামূল্যের বই ছাপানোর কার্যাদেশ পাওয়া প্রেসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবারহ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং মাওয়া-কাওড়াকান্দিসহ অন্যান্য ফেরিঘাটে বিনামূল্যের বইয়ের পরিবহনকাজে নিয়োজিত ট্রাকগুলোকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পারাপারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নৌপরিবহন সচিবের কাছে আরেকটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক সুষ্ঠুভাবে পরিবহন ও বিতরণের জন্য বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রাক যাতায়াতের অনুমতি দিতে সেতু বিভাগের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথম দিনে পাঠ্যপুস্তক দিবসের মাধ্যমে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দেয়া হচ্ছে। সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে প্রতি বছর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ জানানো হয়ে থাকে। এছাড়া পুরো প্রক্রিয়ায় কেউ যেন নাশকতা সৃষ্টির মাধ্যমে বিনামূল্যের বই বিতরণের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে না পারে, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।