মেহেরপুরে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে : নানাবিধ সংকটে ব্যাহত চিকিৎসাসেবা

 

মাজেদুল হক মানিক/মহাসিন আলী: আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রতিনিদিনই বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৭২ জন শিশু। আর প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে বহু সংখ্যক শিশু রোগী। পর্যাপ্ত জনবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ না থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নিউমোনিয়া সর্দি, কাশি, ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টজনিতসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুরা প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছে। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে শিশুদের জন্য নির্ধারিত ২০টি শয্যা। অথচ প্রতিদিন ভর্তি থাকছে ৭০-৮০ জন। মা ও শিশু বিভাগের শিশুদের জন্য জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সিঁড়ি ঘরের পাশের জায়গায় রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ভর্তি রোগী ছাড়াও বহির্বিভাগে প্রতিদিনই চিকিৎসা নিচ্ছে আরো প্রায় ৪০০ জন শিশু। এই বিপুল পরিমাণ রোগীর চাপ সমালাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে ১০০ বেডের জন্য যে পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করা হয় তাও পর্যাপ্ত নয়। আবার শিশুদের নেবুলাইজড করা মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। ভর্তিরোগীরা ওই সেবা বাইরে থেকে কিনে নিচ্ছেন।

রাতে শিশুদের গরম কাপড়ে রাখাসহ দুপুরের আগেই গোসল সেরে ফেলতে হবে। আর সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিলেন মেহেরপুর জেনারেল হাসপতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. ওবায়দুল ইসলাম পলাশ।

প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৯৭ সালে নির্মিত হয় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল। খাতা-কলমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। অথচ বাড়েনি কোনো সুযোগ-সুবিধা। ১০০ বেডের যে সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার তাও নেই হাসপাতালটিতে। চিকিৎসক সংকটও রয়েছে।

সদর উপজেলার গোভীপুর গ্রাম থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শেফালী খাতুন জানান, তার বাচ্চা অসুস্থ হলে ঈদের পরদিন হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু বেড না পাওয়ায় মাও শিশু ওয়ার্ডের বাইরে রেখে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় বেশির ভাগই ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। নানাবিধ সংকটে নাজেহাল হচ্ছেন শিশু রোগী ও স্বজনরা। এমন অভিযোগ গাংনী থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আলমগীর হোসেনের। তিনি জানান, তার ছেলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালের নেবুলাইজড মেশিন নষ্ট থাকায় ভাড়া করে নিয়ে গ্যাস দিতে হচ্ছে। এতে তাদের খরচের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুন। এছাড়াও হাসপাতালের টয়লেট সমস্যাসহ সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের বেহাল দশায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রোগীর স্বজনরা।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, ২৫০ বেডের জনবল, ওষুধ ও নেবুলাইজড মেশিনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত জানানো হয়েছে। বরাদ্দ সাপেক্ষে সমস্যার সমাধানের আশা করছেন তিনি।

Leave a comment