যেখানে সেখানে বোমা : খেসারত দিচ্ছে সমাজ

 

গুটিকয়েক বিপথগামী মানুষের জন্য গোটা সমাজই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। বাড়ির আশপাশ, আগান-বাগান কোনো স্থানই এখন নিরাপদ নয়। কখন যে বিস্ফোরিত হয়ে উড়ে যাবে হাত-পা, ঝরে যাবে প্রাণ তা অনুমান করা না গেলেও সেই আতঙ্ক স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় চরম অন্তরায় হয়ে দেখা দিচ্ছে। পরিত্রাণ প্রয়োজন।

 

গতপরশু চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার চিৎলার শিশিরপাড়ার মাঠে বাগানে বোমা বিস্ফোরণে এক রাখাল বালক জখম হয়েছে। এ ঘটনা যে নতুন করে শঙ্কা বাড়িয়েছে তা নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না। পরিত্যক্ত বোমায় আবার কখন যে কে জখম হয় তা নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। বোমা এমন এক মারণাস্ত্র যা গোপনে কোনো এক স্থানে বসেই বানানো যায়। উপকরণের অধিকাংশই দেশীয় বাজারেই মেলে। বারুদ প্রতিবেশী দেশ থেকে পাচার করে আনা হয়। মাঝে মাঝে ওই বারুদের চালান অবশ্য ধরাও পড়ে। যে চালান ধরা পড়ে না, তা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। অপরাধচক্রের পাশাপাশি কিছু রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের কাছেও বোমা ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। হরতালের পূর্বরাতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির মধ্যদিয়ে হরতালকে সফল করার হীন মানসিকতার বর্হিপ্রকাশ নতুন নয়। তা ছাড়া পটকাবাজি ফোটানোর বিষয়ে অনেকটা নমনীয় দৃষ্টিও বোমা তৈরির কারিগরদের জন্য সোনায় সোহাগা হয়েছে। যেখানে সেখানে বোমা, বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে চাঁদাবাজি ছাড়াও ডাকাতি অপহরণের কাজেও বোমা ব্যবহার করা হচ্ছে। বারুদ পাচাররোধে ব্যর্থতা যেমন অস্বীকার করা যায় না, তেমনই বোমাবাজ সন্ত্রাসীচক্র উৎখাতের পরিবেশও গড়ে তুলতে পারিনি আমরা। না পারারই খেসারত মূলত সমাজকেই দিতে হচ্ছে। ফলে সমাজের সকলকেই সজাগ হতে হবে। শিশু কিশোরদেরও পরিত্যক্ত কিছু নিয়ে কৌতূহলী হওয়া থেকে নিবৃত করা দরকার।

 

যেখানে সেখানে বোমা। পরিত্যক্ত বোমার আঘাতে একের পর এক জখম হওয়ার ঘটনাকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখা উচিত হবে না। বারুদ পাচাররোধে সীমান্ত প্রহরা জোরদার করার পাশাপাশি বোমাবাজ বিরোধী অভিযানও জোরদার করতে হবে। সামাজিকভাবে বোমাবাজ অপরাধীচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

Leave a comment