স্টাফ রিপোর্টার: কোনো ধরনের শাস্তি বা জরিমানা ছাড়াই অবৈধ প্রবাসীদের বৈধতা দিতে সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের দেয়া বিশেষ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩ নভেম্বর। এ সময়ের মধ্যে বিশেষ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক করে বৈধ হতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম। সৌদি বাদশাহ’র সাধারণ ক্ষমা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত জানান, ৩ নভেম্বরের পর কোনো অবস্থাতেই সময় আর বাড়ানো হবে না। ক্ষমার সুযোগ নিয়ে এই সময়ের মধ্যেই বৈধ হতে হবে প্রবাসীদের। প্রবাসীদের বৈধকরণে দূতাবাস এবং কনস্যুলেট প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি করে রাষ্ট্রদূত বলেন, অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) অফিসসহ সৌদি আরবে বাংলাদেশি আছে এমন শহরগুলোতে আমাদের (দূতাবাস) কর্মকর্তারা নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন। যারা অবহেলা করে বৈধতার এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন না তাদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটা বাংলাদেশিদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ। এই সুযোগে বৈধ না হলে ৩ নভেম্বরের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক ধরপাকড়ে নামবে। তখন তাদের হাতে কেউ আটক হলে দূতাবাসের কিছুই করার থাকবে না।
তাই বাকি যে দিনগুলো হাতে আছে তার মধ্যে বৈধ হতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম। হজ সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, অবৈধভাবে হজ পালনকারীদের ধরতে সৌদি প্রশাসন খুবই সিরিয়াস। অনুমোদনহীন হাজি ধরা পড়লে বিদেশিদের তাৎক্ষণিকভাবে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। পাশাপাশি সৌদি আরবে তার প্রবেশে দশ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে। তিনি বলেন, অন্য যেকোনো সময়ের চাইতে এবছর মক্কা-মদিনায় অবৈধ হাজি শনাক্ত করতে সৌদি প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে। তাই অনুমোদন ছাড়া হজে না যেতে বাংলাদেশিদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। সৌদি বাদশার বিশেষ ক্ষমা ঘোষণার পর এ পর্যন্ত সর্বমোট ২ লাখ ২২ হাজার ২শ’ ৯৯ জন বিদেশি সৌদি আরব ছেড়েছেন। এরা সবাই ভিজিট ভিসা বা নন-ওয়ার্ক ভিসায় এতদিন সৌদি আরবে অবস্থান করছিলেন। সৌদি পাসপোর্ট বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বৈধকরণের এই সময়ের মধ্যে ৮ লাখ ৫৯ হাজার ২৭ জন এক্সিট রি-এন্ট্রি (ছুটিতে) ভিসা নিয়ে সৌদি আরবের বাইরে গিয়েছেন। পাসপোর্ট ডিপার্টমেন্ট এর মুখপাত্র লে. কর্নেল আহমদ আল লুহাইদান বলেন, ৩ নভেম্বর বৈধকরণের সীমা শেষ হওয়ার সাথে সাথে রাস্তা এবং জনবহুল এলাকায় চেকিং শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া কোনো বিদেশিকে বৈধ করা হবে না। আর যথাযথ পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট বা আঙুলের ছাপ দেখে প্রত্যেককে শনাক্ত করা হবে। এ জাতীয় বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কাউকে দেশ ত্যাগ করতে দেয়া হবে না। বৈধকরণের সময়সীমা বেঁধে দেয়ার সময়ে যারা হুরুব (পলাতক) হয়েছেন, তারা এ সুযোগ পাবেন না এবং তারা অন্য কোথাও ট্রান্সফার হবার সুযোগও পাবেন না। এদিকে বুধবার সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয় এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, বৈধকরণের বর্ধিত সুযোগ পেয়ে সৌদি আরবে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকগণ অভিবাসী আইন ভাঙছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, সৌদি বাদশাহ’র দেয়া বৈধকরণের বর্ধিত সময় আগামী জিলহজ্জ মাসের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে। বিদেশি নাগরিকদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ প্রক্রিয়ায় বৈধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে। উভয় মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয় বৈধকরণের নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর অবৈধ বিদেশি নাগরিক এবং তাদের চাকরিদাতা আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে।