দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে (চিৎলা হাসপাতাল) চিৎলা নতুনপাড়ার শিশির মাঠে রহস্যজনকভাবে বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিস্ফোরিত বোমার আঘাতে রহিম (১৪) নামে এক রাখাল বালকের মুখ মণ্ডল ও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলছে গেছে। আহত রহিমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। লোকালয় থেকে দূরে নির্জন এলাকায় বাগানের মধ্যে এ বোমার বিস্ফোরণ নিয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসীর মধ্যে নানা গুঞ্জন শোনা গেলেও রাখাল বালকের পরিবার থেকে বলা হচ্ছে সে ওই মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিলো। এলাকাবাসীর ধারণা, ঘটনাস্থল ও তার আশে পাশে আরও বোমা থাকতে পারে। বোমা বিশেষজ্ঞ দিয়ে ওই এলাকাটা তল্লাশি করে দেখা দরকার। সে চিৎলা নতুনপাড়ার আজিবর রহমানের ছেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা নতুনপাড়ার আজিবর রহমানের ছেলে রহিম বেলা সাড়ে ১০টার দিকে চিৎলা শিশির মাঠে ঘাস কাটতে যায়। ঘাস কাটার সময় ছোট আকারের গর্তের মধ্যে লাল কসটেপ দিয়ে মোড়ানো একটি বোমা সাদৃশ্য বস্তু দেখতে পায়। সে বোমাটির ওপর নিড়িং দিয়ে আঘাত করলে বোমাটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। বোমার আঘাতে রহিমের মুখের ডান অংশসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। বোমা বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে একই মাঠে কাজ করা কয়েকজন কৃষক এগিয়ে যায় এবং রহিমকে আহত অবস্থায় দেখতে পেয়ে দামুড়হুদা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
আহত রহিমের মা জাহানারা জানান, ঘটনার ১৫-২০ মিনিট আগে সকাল অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে রহিম গরুর ঘাস কাটতে মাঠে যায়। আধঘণ্টার মাথায় একটি বিকট শব্দ শুনতে পায়। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে তোমার ছেলে রহিম বোমার আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রহিমের মুখের ডান অংশে প্রচণ্ডভাবে আঘাত লেগেছে। তার মুখে ২০টি সেলাই দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বোমার আঘাত লেগেছে। তবে সে বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত।
এলাকাবাসী জানান, রহিম যে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলো ওই জমিটি একই পাড়ার আকুব্বার মোল্লার ছেলে সন্ত্রাসি কাবা লিজ নিয়ে তুলা ও ঝালে আবাদ করেছে। কাবা দিন ২০ আগে চিৎলা হাসপাতালে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক হয়। সে বর্তমানে জেলহাজতে আছে।
দামুড়হুদা থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান হাবীব (পিপিএম) জানান, রহিমের পরিবার থেকে যে কথা বলা হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ ঘটনাস্থল ও তার আশে পাশে কোনো ঘাস নেই। তাছাড়া বোমাটি বিস্ফোরণ হয়েছে একটি বাগানের মধ্যে বিভিন্ন আগাছা (ঝোড় জজ্ঞল)’র ভেতর। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বোমার আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বোমাটি রহিম ওই স্থানে রাখতে গিয়েছিলো অথবা ওখান থেকে আনতে গিয়েছিলো। অসাবধান বসত বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটায় সে আহত হয়েছে। রহিমের জ্ঞান ফিরলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ও তদন্ত করে বোমা বিস্ফোরণের রহস্য বেরিয়ে আসবে।