মৌসুমীর স্কুলে যেতে বারণ!

 

গাংনী প্রতিনিধি: মৌসুমীকে স্কুলে যেতে বারণ করেছে তার বাবা। চারদিকে ধূমধাম বিয়ের আয়োজন চলছে। আজই (মঙ্গলবার) মৌসুমীর বিয়ে। বই-খাতা ছেড়ে তাকে হাতে তুলে নিতে হবে সংসারে চাবি। বাল্যবিয়ে দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও মৌসুমীর বাবার কাছে এটা তেমন কিছুই নয়। কন্যার লেখাপাড়ার ইচ্ছে থাকলেও তার ইচ্ছার কফিনে শেষ পেরকটি ঠুকে দিয়েছেন বাবা।

মৌসুমী খাতুন (১৩) মেহেপুরের গাংনী উপজেলার খাসমহল গ্রামের কৃষক আদের আলীর মেয়ে এবং তেঁতুলবাড়িয়া ইসলামীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৌসুমীর অমতেই একই গ্রামের সামসুল হোসেনের ছেলে কৃষক লোকমান হোসেনের (১৯) সাথে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছেন আদের আলী। বর ও কনে পক্ষ প্রস্তুত। মঙ্গলবার দুপুরে বর ও বরযাত্রীরা কনের বাড়িতে আসবেন বিয়ে করতে। মেজবানির জন্য দাওয়াত, কেনাকাটা ও সাজ সজ্জাসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ প্রায় সম্পন্ন।

‘শিশু পুষ্টি নিশ্চিত করি, শিশু বিয়ে বন্ধ করি’ এই প্রতিপাদ্যে সোমবার মেহেরপুর জেলাসহ সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস। এমন এক মুর্হূতে মৌসুমী ও লোকমানের বাল্যবিয়ে নিয়ে সচেতন মহলে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে তেঁতুলবাড়িয়া ইসলামীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রজমান আলী জানান, বিয়ে দেয়ার জন্য চলতি জেএসসি মডেল টেষ্ট পরীক্ষায় অংশ নেয়নি মৌসুমী। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বোঝানো হলেও বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে ফেরানো যাচ্ছে না মৌসুমীর বাবাকে। কন্যার লেখাপড়া করানোর সামর্থ্য রয়েছে তার।

তবে বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে বর-কনে পক্ষকে হুঁশিয়ারি করা হয়েছে বলে জানান তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা বিশ্বাস। বাল্যবিয়ে কিংবা শিশুবিয়ে দিলে বর-কনে উভয়ের অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল আমিন।

Leave a comment