জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের জন্য শান্তির অনিবার্যতা তুলে ধরেন। তিনি টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে শান্তির ওপর জোর দিয়ে তা বজায় রাখতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অধিকন্তু টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব বলে গুরুত্বারোপ করেন। এজন্য তিনি বিশ্বব্যাপি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনকে মূল এজেন্ডা করার আহ্বান জানান। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর উপলব্ধি ও আহ্বান অত্যন্ত বাস্তবানুগ। অস্থিতিশীল বিশ্ব ক্রমেই মানবোন্নয়নের বিভিন্ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। একই সাথে জনঅসন্তোষ ও জাতীয় বিভক্তি রাষ্ট্রিক পর্যায়ে উন্নয়নবান্ধব পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাই শান্তির কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমান বিশ্বে উন্নয়ন একটি ব্যাপকভিত্তিক ধারণা। মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণের পাশাপাশি সব ধরনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাই উন্নয়ন। এখানে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা একটি বড় মানদণ্ড। তাই উন্নয়ন শুধু দৃশ্যমান অবকাঠামো ঘেরাটোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ ভাবলে সঠিক হবে না। উন্নয়নের ধারণা যেমন প্রসারিত হয়েছে, তেমনি অর্জনের পথও জটিল হয়েছে। এজন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সর্বস্তরে সুশাসন ও বৈশ্বিক স্তরে আন্তঃরাষ্ট্রীয় ন্যায্যতার প্রতিষ্ঠা জরুরি। বিশ্বের কোথাও শান্তি বিঘ্নিত হলে সেটি গোটা মানবজাতিকেই আক্রান্ত করে।
শান্তি বিঘ্নিত বিশ্বে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে। অনেক ক্ষেত্রে অস্তিত্বের সুরক্ষাই কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই শান্তিপূর্ণ বিশ্বের ধারণা জোরালো হচ্ছে। বাংলাদেশে ক্রমেই দারিদ্র্যবিমোচন ঘটছে, এখন উন্নয়নের শর্তগুলো নিশ্চিত করতে হবে। তবেই মধ্যম আয়ের দেশের স্বপ্ন পূরণ হবে। এজন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রত্যাশিত।