অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি : জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ায় থানা পুলিশের দু দফায় অভিযান
আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: আন্দুলবাড়িয়ায় ভেজাল বীজের কারখানা আবিষ্কার করেছে পুলিশ। দীর্ঘদিনের ভেজাল বীজ ব্যবসায়ী আন্দুলবাড়িয়ার হাসানের হাসান বীজ ভাণ্ডারে অভিযান চালায় পুলিশ। গতকাল রোববার দু দফা অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল প্যাকেট, প্যাকেট করার মেশিন ও কয়েক বস্তা নকল বীজ উদ্ধার করেছে। দোকানে অভিযান চালানোর পর থেকেই হাসান গাঢাকা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীরা আন্দুলবাড়িয়ার আরো কয়েকটি বীজ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানোর দাবি জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের মোক্তারপুর গ্রামের রুহুলের ছেলে হাসানুজ্জামান হাসান আন্দুলবাড়িয়া বাজারের বীজ ব্যবসায়ী। আন্দুলবাড়িয়া বাজার মিস্ত্রিপাড়ামোড়ে রয়েছে তার হাসান বীজ ভাণ্ডার নামের দোকান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল সবজি বীজের ব্যবসা করে কৃষকদেরকে ঠকাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি ভেজাল বীজ ও বীজ বোঝাই করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির হাজার হাজার নকলপ্যাকেট রাখেন তার শ্বশুরবাড়ি আন্দুলবাড়িয়া ৯ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে তার শ্বশুর আমজাদ হোসেনের বাড়িতে। ওই বাড়িতে রেখেই ভেজাল বীজ নকল প্যাকেটে ভরে খাঁটি বীজ হিসেবে দোকানে বিক্রি করে থাকেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জীবননগর থানার এসআই আবুল হাশেম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গতকাল রোববার দুপুরে হাসানের শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় বিভিন্ন কোম্পানির ১০ হাজার খালি প্যাকেট দেখতে পান এসআই আবুল হাশেম। সেই সাথে দেখতে পান বীজ প্যাকেটিং করার মেশিন। নমুনা স্বরুপ ১ হাজার খালি প্যাকেট উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে আন্দুলবাড়িয়া ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা কয়েক লাখ টাকা ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে জীবননগর থানার সাথে দেনদরবার করতে থাকেন। অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে পুলিশ। পরে গতরাত সাড়ে ১১টার দিকে এসআই আবুল হাশেম ও এসআই রঞ্জিত কুমার দাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দ্বিতীয় দফা অভিযান চালান হাসানের শ্বশুর আমজাদের বাড়ি। এ সময় দেড় বস্তা ধেড়সের বীজ, লাউয়ের বীজ দু বস্তা ও এক বস্তা লাল শাকের খোলা বীজ জব্দ করে পুলিশ। তবে দুপুরে রেখে যাওয়া বীজভরার ৯ হাজার খালি প্যাকেট আর পায়নি পুলিশ। হাসানের শ্বশুরের পরিবার পুলিশকে জানায়, সেগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
অভিযোগকারীরা জানায়, হাসান দীর্ঘদিন ধরে এভাবে নকল ও ভেজাল বীজ বিক্রি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। অনেক চাষি তার কাছে প্রতারিত হয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। কেউ কেউ অভিযোগ করে বলেছেন, জীবননগরের একজনের মাধ্যমে হাসান ভারত থেকে নিম্নমানের বীজ এনে নকল প্যাকেটে ভরে বিক্রি করে থাকেন। এলাকাবাসী হাসানের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে। একই সাথে আন্দুলবাড়িয়ার আরো কয়েকজন ভেজাল বীজ বিক্রেতার দোকানে অভিযান চালিয়ে বীজ যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন। যাতে চাষিরা না ঠকে।
এ বিষয়ে গতরাতে অভিযুক্ত হাসান মোবাইলফোনে দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানান, আমার নামে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সত্য নয়। তিনি বলেন আন্দুলবাড়িয়ার ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন ব্যক্তি আমার কাছে দেড় লাখ টাকা চেয়েছিলো পুলিশকে ম্যানেজ করার কথা বলে। তাদেরকে টাকা না দেয়ার কারণেই পুলিশ দিয়ে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে।