চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠার ৪৯ বছর বরণ অনুষ্ঠান

ঐক্যের প্রয়োজনে গঠিত প্রেসক্লাব এলাকাবাসীকে শুধু ঐক্যবদ্ধই করেনি উন্নয়নে রেখে চলেছে অবদান

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার অধিবাসীদের ঐক্যের প্রয়োজনেই আজ থেকে ৪৯ বছর আগে প্রেসক্লাব গঠনের তাগিদ অনুভব করেন সেদিনের কর্মরত সাংবাদিকেরা। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব গঠনে চুয়াডাঙ্গাবাসী শুধু কথা বলার স্থানই পেয়েছিলেন না, ঐক্যবদ্ধ হয়ে উন্নয়নে যেন ভরসা পেয়েছিলেন। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব গঠনকালেও যেমন চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নের কথা বলেছে, এখনও বলছে। আগামীতেও চুয়াডাঙ্গাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং উন্নয়ন তরান্বিত করতে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব বিগত দিনের মতোই অবদান রাখবে।

চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠার ৪৯তম দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মকবুলার রহমান উপরোক্ত মন্তব্য করেন। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠাকালীন সহসভাপতি বর্তমান সভাপতি মাহতাব উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক সরদার আল আমিন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাকাল তথা ১৯৬৬ থেকে টানা ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মকবুলার রহমান। তিনি প্রেসক্লাব গঠনের গুরুত্বারোপের পাশাপাশি সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল কেন হতে হয় তারও সংক্ষিপ্ত বর্ণনাসহ দিকনিদের্শনা দেন। ১৯৭৮-৭৯তে সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করেন প্রবীণ শিক্ষক এলাহী বকস। তিনি চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের তরুণ সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরার পাশাপাশি সশরীরেও অন্যায়ের প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ দু বছর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল মতিন মালিক। তিনি চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের উন্নয়নসহ সমাজের সর্বক্ষেত্রেই প্রেসক্লাবের অংশগ্রহণকে প্রশংসা করে বলেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সবসময়ই সুন্দর সমাজ গঠনের পক্ষে কাজ করেছে। এখনও করছে। সকল সাংবাদিককে ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট সভাপতি অ্যাড. এসএম শরিফ উদ্দীন হাসু চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সকল কর্মকাণ্ডের সাথে পুনঃ একাত্মতা ঘোষণা করে আগামী দিনে চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নসহ সকল সাংবাদিকের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সবসময়ই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে গেছে, এখনও এগিয়ে যাচ্ছে। সকলের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আগামীতে আরো সুন্দর আয়োজন করা সম্ভব হবে।

চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক রিচার্ড রহমানের পক্ষে সহসভাপতি জেড. আলমের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় আলোচনাসভার সূচনাতেই কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সদস্য নাসির উদ্দীন জোয়ার্দ্দার। প্রেসক্লাবের প্রয়াত সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন প্রেসক্লাব সদস্য বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট সেক্রেটারি শাহার আলী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি হামিদুল আজম, জীবননগর প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ারুল কবীর, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি দীন মোহাম্মদ, দর্শনা প্রেসক্লাব সেক্রেটারি ইকরামুল হক পিপুল ও সরোজগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিটের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দিতে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবকে এলাকার সকল সাংবাদিকের অভিভাবক সংগঠন হিসেবে আরো আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

প্রেসক্লাবের সাবেক নেতৃবৃন্দের মধ্যে সাবেক সভাপতি আজাদ মালিতা, সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ জিল্লু, সাবেক সদস্য সচিব নাসির উদ্দীন আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম শেলী বক্তব্য রাখেন। বক্তারা প্রেসক্লাবের সমৃদ্ধতা অর্জনে তথা অগ্রযাত্রায় সম্মিলিত প্রয়াসের গুরুত্বারোপ করে বলেন, চুয়াডাঙ্গার সকল সাংবাদিক এখন ঐক্যবদ্ধ। ঐক্যের বলে বলিয়ান হয়ে বর্তমান কমিটি সকলের সার্বিক সহযোগিতায় প্রেসক্লাবের ঔজ্জ্বলতা মেলে ধরে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের পথেই রয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল থেকেই প্রেসক্লাব সদস্যরা সৃষ্টি সুখের উল্লাসমাখা মেজাজে উপস্থিত হতে থাকেন। মাইকে মৃদু স্বরে বাজতে থাকে ‘আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে….সহ ‘চলো না দীঘায় সৈকত ছেড়ে ঝাউবনে, গানও। পৌনে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে, সুবাসী বায়ু উড়িয়ে নেচে গেয়ে প্রেসক্লাব সদস্যরা চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। প্রেসক্লাবে ফিরে কাটা হয় প্রেসক্লাবের জন্মদিনের কেক। এ পর্বের উপস্থাপক ছিলেন প্রেসক্লাব সদস্য ইসলাম রকিব। আলোচনা পর্ব শেষে মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হন প্রেসক্লাবের দাতা সদস্যদের মধ্যে অ্যাড. হাজি সেলিম উদ্দীন খান, সমাজসেবক তৌহিদ হোসেন, সমাজসেবক খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, শাহারিন হক মালিক প্রমুখ। দাতা সদস্যরা প্রেসক্লাব সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি আগামী দিনে প্রেসক্লাবের সাথে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এছাড়াও স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীও আয়োজনে অংশ নেন।