তাছির আহমেদ: দামুড়হুদা বাজারে মরিচের দাম নেই। অথচ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এক কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকায় আর মরিচ বিক্রি হচ্ছে। মাত্র দশ টাকায়। একবিঘা মরিচ চাষ করে পুঁজি ফেরানোই এবার দায়, কথাগুলো বললেন উপজেলার নতুন হাউলী গ্রামের মরিচচাষি ওয়াহেদ। সেইসাথে আরো বলেন, জমি থেকে এক মন মরিচ তুলতে কামলা নিচ্চে দুশো টাকা, হাটে এনে তা বিক্রি হচ্ছে ৪শ টাকায়। এরমধ্যে খাজনা দিতে হচ্ছে কুঁড়ি টাকা আবার মাপার জন্য দাঁড়িপালা নিচ্ছে দশটাকা। আনা খরচ ও হাত খরচ বাদ দিলে একমন মরিচে লাভ থাকছে মাত্র একশ সত্তর টাকা। আপনারাই বলেন খরচ উঠবে কীভাবে?
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে কাঁচা মরিচের লক্ষ্যমাত্রা ২১০ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয়েছে ৩৫০ হেক্টর। কৃষি অফিসের নিয়মিত তদারকির কারণে এবার পর্যাপ্ত ভালো ফলন উৎপাদিত হয়েছে। সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে চাষিরা কাঁচামরিচের দাম পাচ্ছে না। বর্তমান বাজার এতোটাই মন্দা! একজন চাষির খরচ কীভাবে উঠবে।
দামুড়হুদার গত রোববার হাটে কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে আসা উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামের জহুরুল হক, জয়রামপুর বারুইপাড়ার জমাত আলী ও কুমড়ো দোয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, অন্যের জমি বর্গা নিয়ে এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছিলাম। তাতে সবমিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত দু-তিন হাজার টাকার মরিচ বিক্রি হয়েছে। বর্তমান যে বাজারদর তাতে আশা করছি খরচের অর্ধেক হয়তো উঠে আসবে।
উপজেলায় কাঁচামরিচের উৎপাদন ভালো হওয়ায় সস্তাদরে বিক্রির জন্য দামুড়হুদা হাটে পর্যাপ্ত কাঁচামরিচ আসছে। আর এ সুযোগ কাজে লাগাতে উত্তরবঙ্গের পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখানে ধর্ণা দিচ্ছে। পাকশির সাইফুল বলেন, আমি প্রতি হাটে এখান থেকে কয়েক’শ মন মরিচ কিনে দিনাজপুর, জয়পুর, বিরামপুরসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন মোকামে পাঠায়। দর্শনার বাবুল বলেন, আমি ক্ষেত মালিকদের কাছ থেকে মরিচ কিনে চট দিয়ে বড় বড় ঢপ তৈরি করি। পরে তা ট্রেনযোগে খুলনায় মোকামে পাঠায়। এতে ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের মুখ দেখলেও চাষিদের মুখভার, কারো কারো মাথায় হাত!