গাংনীর বামন্দীর সেই সততা নাম পাল্টে এখন শাহীন ক্লিনিক

ভ্রাম্যমা আদালতের অভিযানে কর্তৃপক্ষের ভোদৌ

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বামন্দী বাজারে অবস্থিত বহুল আলোচিত সেই সততা ক্লিনিক এখন নাম পাল্টে শাহীন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে পরিচালিত হচ্ছে। গতকাল শনিবার বামন্দী বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের খবর পেয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তালা লাগিয়ে ভোদৌঁড় দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন এমনটি জানিয়ে বলেছেন, নাম পাল্টালেও পাল্টায়নি পূর্বের সব কর্মকাণ্ড কিংবা চিকিৎসা ব্যবস্থা। গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুস সালাম পরিচালিত ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত বামন্দী ও গাংনী বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে জরিমানা আদায় করেছেন।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আগমনের খবর পেয়ে শাহীন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকসহ কয়েকজন প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। অবশ্য কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনরা এ সময় ক্লিনিকের মধ্যেই আটকা পড়েন। ক্লিনিকের সামনে ফাতেমা ফার্মেসি ও টকি মেডিকেলের লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় ২ হাজার ৫শ টাকা করে জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

স্থানীয় বিভিন্নসূত্রে আরো জানা গেছে, সততা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ১৬ আগষ্ট অভিজ্ঞ চিকিৎসক নামধারী নাজমুল হুদার অস্ত্রপচারে এক শিশুর মৃত্যু হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে ওই চিকিৎসকসহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ৪ জনের নামে গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পরদিন অবশ্য বিষয়টি মীমাংসা হলেও সততা ক্লিনিকের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে। লাইসেন্সবিহীন এ ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক ও অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রপচার ও পরীক্ষা চলছিলো। দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় এ সংক্রান্ত কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ক্লিনিকের প্রকৃত চেহারা মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়। সেইসাথে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কয়েকবার অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। শিশু মৃত্যুর পর থেকেই ক্লিনিক বন্ধ করে আত্মগোপন করেন কর্তৃপক্ষ। এক পর্যায়ে ক্লিনিকের পূর্বের এক মালিক এবং সততা ক্লিনিক নাম থাকাকালে কয়েকজন মালিক একসাথে হয়ে নাম পাল্টে শাহীন ক্লিনিক নামে গেলো কয়েকদিন থেকে আবারও কার্যক্রম শুরু করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহীন ক্লিনিক নামেও কোনো লাইসেন্স নেই। নেই কোনো মেডিকেল অফিসার কিংবা দক্ষ সার্জন কিংবা নার্স। পূর্বের কয়েকজন বিশেষ বিশেষজ্ঞ নাম দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। চলছে জমজমাট ক্লিনিক ব্যবসা। নাম পরিবর্তন করেই তারা প্রতারণার নতুন ফাঁদ পেতেছেন। আর এ ফাঁদে পা দিয়ে আবারও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অসহায় দরিদ্র রোগী ও তার স্বজনরা। অবশ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, নাম পরিবর্তন করেও রক্ষা পাবে না শাহীন ক্লিনিক।

এদিকে গতকাল বামন্দী বাজারের অভিযানের আগে ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত গাংনী শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। এ সময় মুক্তি ডায়গনস্টিক সেন্টারে ২ হাজার টাকা, হুদা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ২ হাজার টাকা, জোড়পুকুরিয়া বাজারের আনোয়ার স’ মিল থেকে ২ হাজার টাকা এবং এক ট্রাকচালকের কাছ থেকে ৫শ টাকা জরিমানা আদায় করেন।