এনজিও’র ণের কিস্তি আদায়কারীদের কটুক্তিতে ক্ষুব্ধ স্ত্রীর বকাঝকায় রোজদার রতনের আত্মহত্যা

 

স্টাফ রিপোর্টার: এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তার কিস্তি দিতে না পেরে কটুক্তিতে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন রোজদার রতন (২৮)। গতকাল শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে তিনি তার শ্বশুরবাড়ি চুয়াডাঙ্গার কবিখালীতে বিষপান করেন। সাড়ে ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে তিনি মারা যান।

রতন আলমডাঙ্গা জেহালার মাদারহুদা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। তিনি মোমিনপুর কাবিখালীর উম্মাত আলীর মেয়ে আরজিনার সাথে বছর দু আগে বিয়ে করেন। স্ত্রীর কোলে রয়েছে এক মাসের সন্তান। গতকাল মাঠ থেকে ফিরে স্ত্রীর মুখে ঋণকিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আশা এনজিও’র আদায়কারীদের কটুক্তির বর্ণনা শোনেন। স্ত্রীও রতনকে অকর্মা বলে বিগড়ে দেন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি বিষপান করেন। তাকে তার শাশুড়ি রহিমা খাতুন ও শ্যালক উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতলে নিয়ে ভর্তি করান। ভর্তির কিছুক্ষণের মাথায় রতন মারা যান। লাশ ফেলে শাশুড়ি ও শ্যালক সটকে পড়েন। সন্দেহ বাড়ে। হাসপাতালের লোকজন লাশ আটকে দেয়। পরে রতনের পিতা খোরশেদ আলম ও শ্বশুর উম্মাত আলীসহ তাদের নিকটজনেরা হাসপাতালে লাশ নিয়ে টানাটানি শুরু করে। পিতা পক্ষ বলে, লাশ নেয়া হবে নিজ গ্রাম মাদারহুদায়। অপরদিকে শ্বশুরপক্ষ বলে লাশ নেয়া হবে কবিখালী। এনিয়েও উভয়ের মধ্যে উত্তেজনা দানা বাধে। ফলে গতরাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রতনের মৃতদেহ হাসপাতালেই ছিলো।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রতনের পিতা ও শ্বশুরপক্ষের লোকজন বলেছে, রতন বিয়ের পর পরই আশা এনজিও থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ঋণের কিস্তি মাঝে মাঝে রতনও দেন, রতনের পিতাও পরিশোধ করেন। আর কয়েক কিস্তি বাকি রয়েছে। চলতি মাসের কিস্তি দিতে পারেননি রতন। রতনের পিতার পক্ষেও কিস্তির টাকা দেয়া সম্ভব হয়নি। কিস্তি আদায়কারীরা রতনের পিতার নিকট থেকে কিস্তি না পেয়ে রতনের শ্বশুরবাড়িতে হানা দেন। সেখানে রতনের অনুপস্থিতে তার স্ত্রীর সামনে কটুক্তি করেন। কিস্তি আদায়কারীদের কটুক্তিতে স্ত্রী আরজিনা ক্ষুব্ধ হন। রতন মাঠ থেকে ফিরলে তাকে স্ত্রী ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারার জন্য রতনকে যাচ্ছে তাই বলেন। এ অভিমানেই রোজায় থাকা রতন বিষপান করেন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি।