তার আগে হোক ভালো মন্দ নিয়ে যুক্তির তর্ক

 

ঠিকই তো, ‘কে কার হাত ধরে  চলে গেলো’ ‘কে কার সাথে ধরা পড়লো’ এসব আবার সংবাদ নাকি?’ অবশ্যই ওসব সংবাদপত্রে ছাপার মতো সংবাদ নয়। তাহলে সংবাদপত্রে ছাপা হয় কেন? প্রশ্নটি ওইসব ঘটনাবলির মতোই পুরোনো। সে হিসেবে বলতেই হয়, সংবাদপত্রে মূলত ওই গতানুগতিকতা অনুকরণ বা অনুসরণ করতেই অসংবাদও সংবাদপত্রে ঠাঁই দিচ্ছে। পরিহারের তাগিদেই উঠে আসছে বিতর্ক।

 

ভ্রাম্যমাণ পতিতা, পরকীয়া, অপ্রাপ্ত বয়সেই প্রেমের টানে অজানা ঠিকানায় পাড়ি, এসব যেহেতু সমাজেরই চিত্র, সেহেতু তা খবর হয়ে খবরের কাজগে ছাপলে দোষের কী? তাছাড়া কোনো কিছু গোপন করে কি তার সমাধান আশা করা যায়? পক্ষান্তরে প্রশ্ন, যা কিছু গোপন, যা কিছু আড়াল রাখতেই তাগিদ দেয় সভ্যতা, তা প্রকাশের অর্থ কি অসভ্যতা নয়? অসভ্যতা শিশু-কিশোরদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। সংবাদপত্র অবশ্যই সর্বজনিন হওয়া বাঞ্ছনীয়। এরপরও কেন ওইসব বেলিল্লা বেহায়াপনা সংবাদপত্রে তুলে ধরা হয়? এর কুফল ও সুফল নিয়ে বিতর্ক আছে। বিতর্কটার গুরুত্ব যে বাড়ছে তা বলাই বাহুল্য। মূলত সে কারণেই ওই নষ্টামি প্রসঙ্গও ঠাঁই পাচ্ছে সম্পাদকীয় আলোচনায়। বিতর্ক অবশ্যই সুন্দর পথ দেখায়। সুন্দরের পুজারি আমরা। অসভ্যতা নয়, সভ্যতার জন্যই অসভ্যতা পরিহার অপরিহার্য। অবশ্যই সাংবাদিক এবং সংবাদপত্রের দায়িত্বশীলতা প্রয়োজন। অপ্রাপ্ত বয়সে বিপথগামিতা তুলে ধরে দায়িত্বশীলদের দৃষ্টিগোচর করা যেমন সংবাপত্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, তেমনই বিপথগামী তথা অপরাধপ্রবণতা রোধে যা করণীয় তাও অনুসারণীয় বটে।

 

অনেকেই আছেন যারা ওই ধরনের খোঁজেন, কেউ কেউ তার মহল্লার মুখরোচক ঘটনাটি পত্রিকার পাতায় না পেলে অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ তুলে মাতিয়ে তোলেন চা দোকানের চৌকাঠ বা মাচা। মচমচে মুখরোচক খবর ভেবে নয়, সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার মানসে আর সমালোচনা এড়াতে সংবাদপত্রগুলো আজও আটকে আছে গতানুগতিক পাঁচিলে। এ পাচিঁল ভেঙে যাক, এ প্রত্যাশা আমাদেরও। তার আগে হোক ভালো-মন্দ নিয়ে যুক্তির তর্ক।