দুর্ঘটনায় গাংনীর চা দোকানি ও আলমডাঙ্গারমোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত

আলমডাঙ্গাব্যুরো/গাংনী প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার বিনোদপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক বৃদ্ধ ও মেহেরপুর গাংনীর এক চা বিক্রেতা কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার পৃথক সময়ে পৃথক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হন। চা বিক্রেতা ঢাকাগামী জেআর পরিবহনযোগে বাড়ি ফেরার সময় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। জেআর পরিবহনের কোচটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে ধাক্কা মারলে তিনি নিহত হন।

জানাগেছে, আলমডাঙ্গার বিনোদপুর গ্রামের মৃত নয়ন মণ্ডলের বড় ছেলে বয়বৃদ্ধ মনির উদ্দীন মণ্ডল(৭০)।তিনি গতকাল দুপুর ২টার দিকে আলমডাঙ্গা শহর থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বাদেমাজু গ্রামের রুবেলের দোকানের সামনে পৌঁছুলে পেছন দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে ছুটে যাওয়া একটি মোটরসাইকেল তাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। তিনি রোডের ওপর আছড়ে পড়েন। তার মাথায় মারাত্মক চোট লাগে। হাত ও পা ভেঙে রক্তাক্ত জখম হন। তাকে উদ্ধার করে গ্রামবাসীরা প্রথমে আলমডাঙ্গার একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তার অবস্থার মারাত্মক অবনতি দেখে দ্রুত মাইক্রোবাসযোগে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়। পথের মধ্যে শ্রীরামপুরের নিকটে পৌঁছুলে তার মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের দু প্রতিনিধি আলমডাঙ্গা হাউসপুরের আব্দুস সাত্তারের ছেলে বিকাশের এজেন্ট আশানুরের নিকট থেকে হিসাব-নিকাশ শেষে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে জামজামি বাজারে যাচ্ছিলো। পথের মধ্যে চালক ভারসাম্য হারিয়ে পেছনের দিক থেকে বৃদ্ধ মনির উদ্দীনকে সজোরে ধাক্কা দিলে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় চালক ও আরোহী দুজনও আহত হয়েছে। বৃদ্ধ মনির উদ্দীনের মুমূর্ষু অবস্থা দেখে মোটরসাইকেল চালক-আরোহী দুজন দ্রুত সটকে পড়ে। গ্রামের কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে তাড়িয়ে আলমডাঙ্গা শহরের হাউসপুরে গিয়ে তাদেরকে আটক করে। অভিযোগ উঠেছে, ওই সময় হাউসপুরের আশানুর তাদেরকে ছাড়িয়ে দেয়। ছাড়া পেয়ে তারা চুয়াডাঙ্গায় ফিরলে জামজামির মামদ আলীর ছেলে কুদরত আলী আবারও তাদের মোটরসাইকেল আটকে রাখে বলে জানা যায়। সংবাদ লেখা অবধি শেষ পর্যন্ত জানা গেছে, বিষয়টি চুয়াডাঙ্গায় বসে টাকায় মীমাংসার প্রচেষ্টা চলছিলো।

অপরদিকে জেআর পরিবহন দুর্ঘটনায় মেহেরপুরের গাংনী শহরের চা বিক্রেতা সোহানুর রহমান সোহান (২৫) নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হাসপাতালের সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সে গাংনী শহরের আব্দুল মজিদের ছেলে। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে,সোহান ব্যবসায়িক কাজ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে নাটোরের বনপাড়া থেকে মেহেরপুরগামী জেআর পরিবহনের একটি বাসে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ভেড়ামারা হাসপাতালের সামনে বাসটি মোড় ঘোরার সময় বৈদ্যুতিক খাম্বার সাথে ধাক্কা লাগে। এতে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন সোহান। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ খবরে পরিবার,আত্মীয় স্বজন ও স্থানীয়দের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এদিকে গতকাল দুপুরের পর সোহানের লাশ বাড়িতে পৌঁছায়। এসময় স্বজনদের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে লাশের জানাজাশেষে দাফন সম্পন্ন হয়।

 

Leave a comment