আলমডাঙ্গার নিগার সিদ্দিক কলেজে চলছে রাম রাজত্ব

অর্থ বাণিজ্য করে শিক্ষক নিয়োগের পাঁয়তারা

 

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার নিগার সিদ্দিক কলেজের অভিভাবক সদস্যদের না জানিয়েই নেয়া হচ্ছে শিক্ষক নিয়োগসহ সব সিদ্ধান্ত। ফলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। লাখ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করার খায়েশ নিয়েই অবৈধভাবে বেশ কিছু শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। চলছে রামরাজত্ব। এ ছাড়া বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে ফুঁসে উঠেছে এলাকার সাধারণ মানুষসহ অভিভাবক মহল।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, ডিগ্রি ও মাধ্যমিক স্তরে বেশ কিছু শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর দৈনিক মাথাভাঙ্গায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এ বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ার পর তিনজন নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য হতবাক হয়ে যান। তাদেরকে না জানিয়ে এবং ম্যানেজিং কমিটির কোনো সভা না ডেকেই কীভাবে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গেলো তা নিয়ে বিক্ষুব্ধ হন তারা। অবশেষে অভিভাবক সদস্য নাজিম উদ্দিন, রবিউল হক ও আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত ওই নিয়োগ স্থগিতপূর্বক এক সপ্তার মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেন।

অভিযোগকারীরা জানান, কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মো. আবু নাসির নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে কলেজে লেখাপড়ার মান নিম্নগামী হয়ে উঠেছে। ফলাফলের দিক দিয়ে কলেজটি ইতঃপূর্বে ভালো করলেও কয়েক বছর ফলাফল সন্তোষজনক হচ্ছে না। বিগত দু বছরে কলেজের সভাপতি নজরুল ইসলাম সোনা মিয়া, অধ্যক্ষ মো. আবু নাসিরসহ ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য প্রায় ৫০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। ফলে বেশ কয়েকজন অযোগ্য শিক্ষক এখানে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাই ফলাফল বিপর্যয় ঘটছে। আবারও অবৈধভাবে বেশি কিছু শিক্ষক নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে। ডিগ্রি স্তরে লাখ লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তুতি নেয়া হলেও আদৌও ওই সব শিক্ষকের বেতন ছাড় হবে কি না সন্দেহ আছে। ২০১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে এ পর্যন্ত অধ্যক্ষ আবু নাসির আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব দেননি। এক বছর আগে অভিভাক সদস্য নির্বাচিত হলেও তারা বিএনপি সমর্থিত ব্যক্তি বলে কলেজের কোনো কাজে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা হয় না। সম্প্রতি কমিটির কোনো অনুমোদন না নিয়ে অধ্যক্ষ আবু নাসির একটি বড় শিশুগাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

এলাকাসূত্রে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জের কৃতীসন্তান লন্ডনপ্রবাসী ডা. আব্দুস সাত্তার শিক্ষার কথা ভেবেই ১৯৯৫ খ্রিস্টাবে তার প্রয়াত পিতা-মাতার নামে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নিগার সিদ্দিক কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠাতারও কোনো মূল্যায়ন করে না ম্যানেজিং কমিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যভস্থা নেবে বলে আশা করে এলাকাবাসী।