স্টাফ রিপোর্টার: লন্ডন সফররত তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গত সোমবার রাতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়েছেন। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার ইউকে কার্যালয়ে তার ওপর এ হামলা হয়। হামলায় তার কোনো ক্ষতি হয়নি। তথ্যমন্ত্রী জানান, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তার ওপর এ হামলা চালিয়েছে বলে তিনি ধারণা করছেন। রাতে এটিএন বাংলায় ‘মুক্ত সংলাপ’ নামের একটি সরাসরি সম্প্রচারিতব্য অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য মন্ত্রী পূর্ব লন্ডনে অবস্থিত তাদের স্টুডিওতে যান। সেখানে অনুষ্ঠান শুরুর প্রস্তুতিপর্বে তিনি যখন লবিতে অপেক্ষা করছিলেন, তখন অজ্ঞাতনামা দু যুবক সেখানে প্রবেশ করেন। হাসানুল হক ইনু জানান, ওই দু যুবক তাকে ঘুষি মারার চেষ্টা করেন, কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তখন হামলাকারীরা তার ওপর ডিম ছুড়ে মারেন। ইতোমধ্যে তার প্রোটোকল কর্মকর্তা এবং এটিএনের লোকজন সেখানে দৌঁড়ে এসে হামলাকারীদের আটকানোর চেষ্টা করেন। তবে তারা দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক বুলবুল হাসান জানান, স্টুডিওটি নিচতলায় হওয়ায় মন্ত্রী সস্ত্রীক নিচতলায় এবং আমি তখন দোতলায় ছিলাম। হইচই শুনে নিচে নেমে আমি হামলাকারীদের পালিয়ে যেতে দেখি। মন্ত্রীর ওপর দুজন আক্রমণ চালালেও তাদের সাথে আরও চার-পাঁচজন ছিলো। পরে পুলিশ এসে উপস্থিত লোকজনের জবানবন্দি নিয়ে যায়। ঘটনা শুনে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজারুল কায়েস ও অন্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। মন্ত্রী ওই ঘটনার পর অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং টেলিফোনে শ্রোতাদের প্রশ্নের জবাব দেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে, এমন একটি অনুষ্ঠানে যাতে আমি কথা বলতে না পারি, সে জন্য হয়তো এ হামলা হয়ে থাকতে পারে। তবে এভাবে আমার কণ্ঠরোধের চেষ্টা সফল হবে না।’
আজ বুধবার তার ঢাকার উদ্দেশে লন্ডন ছাড়ার কথা রয়েছে। হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, ঘটনা সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে এবং তারা আশা করছেন, কর্তৃপক্ষ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হবে।
জানা গেছে, এটিএন বাংলার ইউকে কার্যালয়ে স্থাপিত ক্লোজ সার্কিট টিভি ক্যামেরায় হামলাকারীদের ছবি ধারণ করা আছে। তবে ঘটনার বিষয়ে এটিএন বাংলা ইউকে কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে মঙ্গলবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, গতকাল রাতে তথ্যমন্ত্রীর ওপর অতর্কিত হামলার অপচেষ্টা করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ইতোমধ্যেই লন্ডন পুলিশ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ দেখে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত ও গ্রেফতারের কাজ শুরু করেছে।