লোকনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা নিয়ে ছলচাতুরির অভিযোগ

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদার লোকনাথপুর সহশিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনী তফশিল ঘোষণায় প্রিসাইডিং অফিসার, প্রধান শিক্ষিকা ও সাবেক সভাপতি ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য আনিছুজ্জামান, ইউপি সদস্য রিকাত আলী ও আমিন উদ্দিন বেল্টু অভিযোগ করে বলেছেন, অন্যান্য বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সংক্রান্ত তফশিল ঘোষণা হলে মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দেয়ার জন্য কমপক্ষে এক সপ্তা সময় থাকে। অথচ এখানে মাত্র ৩ দিন সময় দেয়া হয়েছে। যা ছলচাতুরির আশ্রয়ের সামিল। আর এ ছলচাতুরির নেপথ্যে রয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ কুমার সাহা, প্রধান শিক্ষিকা কানিজ ফাতেমা ও সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমান খোকন। প্রিসাইডিং অফিসার প্রধান শিক্ষিকা ও সাবেক সভাপতির সাথে যোগসাজোশ করে মাত্র ৩ দিনের মধ্যে মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দেয়ার সময় দিয়ে তিনি ঢাকায় গেছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র কেনার সময় থাকলেও বেলা ১১টার পর মনোনয়নপত্র বিক্রি বন্ধ করে দেন লাইব্রেরিয়ান অনু। গত বৃহস্পতিবার সকালে ইউপি সদস্য রিকাত আলী মনোনয়নপত্র তুলে স্কুল থেকে বের হওয়ার সময় খোকন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মনোনয়নপত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। তারই রেষ ধরে লোকনাথপুরে দিনভর চলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। তারা আরও অভিযোগ করে বলেছেন, লোকনাথপুর সহশিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এখন লেখাপড়ার পরিবর্তে শুধু রাজনীতি হয়। বিশেষ করে খোকন সভাপতি হওয়ার পর লাইব্রেরিয়ান মাহবুবুর রহমান অনুর কুপ্ররোচনায় শুরু হয়েছে লেখাপড়ার পরিবর্তে রাজনীতি। সম্প্রতি লাইব্রেরিয়ানের স্ত্রী এ স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদানের পর থেকে রাজনীতির মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। সব সময় একে অপরের প্রতি কাদা ছুড়াছুড়ি লেগেই আছে। আমরা কিছু বলতে গেলে সাবেক সভাপতি খোকন গালাগালি শুরু করে। স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা খোকনের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাননা। কারণ প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে খোকন ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আবু হানিফ ও এলাহিসহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কওছার আলীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং স্কুলের মধ্যেই অনেকটা উলঙ্গ হয়ে শিক্ষকদের হুমকি দিয়ে বলে পারলে…..ছিড়ে নিস। অভিভাবক আনিছ ও রিকাত আলী আরও বলেন, যে ৩ জন এ স্কুলকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন তাদের কোনো ছেলে মেয়ে এ স্কুলে পড়ালেখা করেনা। বিধায় স্কুলে লেখাপড়ার কি হলো তা নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। যেহেতু এ স্কুলে আমাদের সন্তানরা লেখাপড়া করছে তাই তাদের চেয়ে দরদটা আমাদের একটু বেশি। শুনছি সাবেক সভাপতি খোকন সম্প্রতি স্কুলের বিভিন্ন খাতে ২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে দাতা সদস্য হয়েছেন। তিনি কীভাবে দাতা সদস্য হলো তা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন এলাকার সচেতন অভিভাবকগণ। সর্বোপরি এ স্কুলে লেখাপড়ার পরিবর্তে টাকা পয়সার ভাগবাটোয়ারা আর ক্ষমতার রামরাজত্ব কায়েম নিয়েই মহাব্যস্ত সাবেক সভাপতি খোকন, প্রধান শিক্ষিকা ও তার স্বামী লাইব্রেরিয়ান অনু। এ স্কুলকে ঘিরে একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে চলায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকমহল। স্কুলে রাজনীতি আর একে অন্যের প্রতি কাদা ছুড়াছুড়ি বন্ধ করে লেখাপড়ার মানউন্নয়নে মনোযোগ দেয়ার জন্য স্কুলের সকলশিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন উদ্বিগ্ন অভিভাবকমহল।