মাথাভাঙ্গা হোক আরো বলিষ্ঠ, আরো সমৃদ্ধ
স্টাফ রিপোর্টার: তেমন কোনো আয়োজন ছিলো না, উল্লাস তো নয়ই। এরপরও থামানো যায়নি মাথাভাঙ্গা’র দু যুগ উদযাপন। রাত ১২টা ১ মিনিটে আকস্মিক মিষ্টিমুখ। ভোরের দোয়ার আয়োজনটা অবশ্য ছিলো বিতরণ বিভাগের পূর্বপ্রস্তুতির অংশ। সকালে বিক্রয় প্রতিনিধিদের সাথে ফুলকো লুচি আর আলুকশা দম দিয়ে নাস্তা? ওটাও অনেকটা আকস্মিক। সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সাংবাদিক ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতি পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই মিলনমেলায় রূপ নেয়। সেলফোনে অসংখ্য ক্ষুদ্রবার্তায় জানানো হয় শুভেচ্ছা। সকলের একই প্রত্যাশা- মাথাভাঙ্গা হোক আরো বলিষ্ঠ, আরো সমৃদ্ধ।
মিলনমেলায় কেউ কেউ তাগিদ দিলেন, কলেবর বৃদ্ধির। কেউ কেউ বললেন সর্বস্তরের সাংবাদিকদের আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। মাথাভাঙ্গা যেহেতু এখন সাবালক, সেহেতু দায়িত্ব অনেক। সকল পাঠকই মাথাভাঙ্গার সাংবাদিক, পাঠকরাই মাথাভাঙ্গা পরিবারকে সুপথে চলার অন্যতম পরামর্শক।
দৈনিক মাথাভাঙ্গার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিলো গতকাল। ১৯৯১ সালের ১০ জুন থেকে যাত্রা শুরু করে দৈনিক মাথাভাঙ্গা এলাকার অসংখ্য পাঠককূলের সহযোগিতা নিয়ে দীপ্ত পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। সমাজ থেকে কুসংস্কার, সন্ত্রাস অনিয়ম দুর্নীতি দূর করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে দিন, মাস, বছর গুনে গতকাল পদার্পণ করেছে দু যুগে। তথা ২৪ বছরে। মাথাভাঙ্গার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উৎসব মূলত এবার সাংবাদিক সদরুল নিপুল ও প্রধান সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিনুর প্রতি সম্মান জানাতে তাদের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়। এরপরও অসংখ্য পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং বিজ্ঞাপনদাতা মাথাভাঙ্গার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। উপহার পাঠিয়েছেন। পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি নতুন করে ব্যক্ত করে মাথাভাঙ্গা পরিবারকে আরো সাহসী করে তুলেছেন। মাথাভাঙ্গার তরফেও সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখার পুনঃ পুনঃ আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, মাথাভাঙ্গা সকলের সহযোগিতায় আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে চায়।
দৈনিক মাথাভাঙ্গা ছাপাখানায় সকালে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। জান্নাতুল মওলা জামে মসজিদের পেশ ইমাম দোয়া পরিচালনা করেন। এর আগে গতপরশু রাত ১২টা ১ মিনিটে মাথাভাঙ্গার প্রধান কার্যালয়ে সম্পাদক পত্নির দেয়া মিষ্টির ফোয়ারা ওড়ে। একে অপরের মুখে মিষ্টি তুলে দিয়ে যেন ২৩টি বছর পাড়ি দেয়ার ঢেকুর তোলেন। সকালে দৈনিক মাথাভাঙ্গা সম্পাদক সরদার আল আমিন সার্কুলেশন ম্যানেজার রানা মাসুদসহ সহকর্মীদের সাথে নিয়ে বিক্রয় প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন। নাস্তা করেন। সকাল ১০টা থেকে প্রেস প্রাঙ্গণেই মাথাভাঙ্গা পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি শুরু হয়। সহকর্মী সদরুল নিপুলকে গত ২০ মে হারানোর ব্যথাভারাক্রান্ত মন নিয়েও মাথাভাঙ্গার উন্নয়নে সরব আলোচনায় মেতে ওঠেন। ঘুরে ফিরেই আসে সদরুল নিপুল হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়টি। অনানুষ্ঠানিক আলোচনাসভা এক পর্যায়ে পূর্ণতায় রূপ নেয়। সম্পাদক প্রকাশক সরদার আল আমিন তার সহকর্মী তথা সর্বস্তরের প্রতিনিধিদের দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ দিয়ে বলেন, সুন্দর সমাজ গঠনে অগ্র সৈনিক হতে হলে নিজেকে স্বচ্ছ হতে হবে। সমাজকে কিছু দিতে হলে অবশ্যই অর্জন করতে হবে। সঞ্চিত না থাকলে দান করা যায় না। ফলে পড়তে হবে। সাংবাদিকতায় বড় সঞ্চয় হলো পড়াশোনা।
মিলনমেলার সঞ্চালক ছিলেন বার্তা সম্পাদক আহাদ আলী মোল্লা। উপস্থিতির তালিকা ছিলো অনেক লম্বা। প্রধান প্রতিবেদক রফিকুল ইসলাম, মাথাভাঙ্গা প্রতিষ্ঠাকালের অন্যতম স্বপ্ন পুরুষ রিচার্ড রহমান, এমআর বাবু, নারায়ণ ভৌমিক, ইলিয়াস হোসেন, শাহ আলম সনি, রাজীব হাসান কচি, রফিক রহমান, আব্দুস সালাম, ইসলাম রকিব, খাইরুজ্জামান সেতু, আলম আশরাফ, সালাউদ্দিন কাজল, হারুন রাজু, হানিফ মণ্ডল, রহমান মুকুল, মহাসিন আলী, কেএ মান্নান, মাজেদুল হক মানিক, সাদ আহম্মেদ, আবু সুফিয়ান, মনজুর আলম, গিয়াস উদ্দীন সেতু, মনির মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম রোকন, মহাবুব আলম, শরিফ রতন, হাসেম রেজা, নজরুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, মামুন কাইরুল, মারুফ হোসেন, মাহবুবুর রহমান, রহমান রঞ্জু, সাইদুর রহমান, জামান তারিক, মাহমুদ কামরান, অনিক সাইফুল, জামিরুল ইসলাম, হোসেন জাকির, মাহবুবুর মুরশেদ শাহীন, নাসির জোয়ার্দ্দার, তাছির আহমেদ, তৌহিদ তুহিন, বখতিয়ার হোসেন বকুল, শাহাবুদ্দিন মোল্লা প্রমুখ। উপস্থিত প্রতিনিধিদের আপ্যায়নসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন দৈনিক মাথাভাঙ্গার জেনারেল ম্যানেজার আখতার সিদ্দিক পিণ্টু। সাথে ছিলেন প্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত মানিকসহ তার সহকর্মীরা। এ ছাড়া মাথাভাঙ্গার আয়োজন মানেই তো মাসুম মণ্ডলের ছোটাছুটি। পূর্ণতা দেয়ার ব্যস্ততা। ফারুক হোসেন, রিপন, আনিছ, বখতিয়ার, লিল্টনের উপস্থিতি সরব থাকলেও মাঝে মাঝে লুকোচুরি তাদের ঘুমের ঘাটতির বিষয়টিই মনে করিয়ে দিয়েছে।
দৈনিক মাথাভাঙ্গা যেমন সকলের সহযোগিতায় দীপ্ত পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে, হাঁটি হাঁটি পা করে সাবালক হয়ে নিজস্ব মেরুদণ্ডে শক্ত করে দাঁড়িয়ে, তেমনই তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনটিও সকল সহকর্মীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পূর্ণতা এনে দেয়। আয়োজনে বিক্রয় প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন। প্রবীণ প্রতিনিধি শাহাবুদ্দিন তার অসুস্থ শরীর নিয়েও ভালোবাসার টানে মাথাভাঙ্গার জন্মদিনে হাজির হন হঠাত রূপ নেয়া মিলনমেলায়।