বিসিএস বিধিমালা সংশোধন হচ্ছে : বাড়ছে পরীক্ষার ফি ও সময় : প্রিলিমিনারিতে থাকছে দু’শ নম্বর

 

স্টাফ রিপোর্টার:বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার প্রিলিমিনারি অংশে বিদ্যমান একশনম্বর বাড়িয়ে দু’শ করা হচ্ছে। বাড়ছে পরীক্ষার সময় এবং আবেদনের ফি-ও। আগামী৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় এ নতুন পদ্ধতি কার্যকর করা হবে বলে আশা করছেবাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন- পিএসসি। এ কারণে সংশোধন করা হচ্ছে বাংলাদেশসিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা।সম্প্রতি সচিব কমিটির বৈঠকে বিধিমালায় পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। খসড়াবিধিটি শিগগিরই মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদিত হলে তা সংসদেবিল আকারে উত্থাপন করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পিএসসি’র একাধিকসূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যানইকরাম আহমেদ বলেন, প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পদ্ধতি সময়োপযোগীকরার জন্য পিএসসি থেকে একটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আশা করছি প্রস্তাবটিচূড়ান্ত হলে আগামী মাসের মধ্যেই নতুন পদ্ধতিতে ৩৫তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিপ্রকাশ করা হবে।

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, গত মে মাসে সচিব কমিটির সভায় এসংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। তবে আগের মতো বহু নির্বাচনীপ্রশ্ন (এমসিকিউ) পদ্ধতিতেই প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচটিবিষয়ের প্রতিটিতে অতিরিক্ত নম্বর যোগের পাশাপাশি নতুন আরেকটি বিষয় যুক্তহতে পারে।জানা গেছে, বর্তমানে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের একঘন্টার বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক) এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ে প্রার্থীদের দক্ষতা যাচাই করা হয়। নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষার পূর্ণনম্বর ২০০ করা হলে অন্তত আরো একটি বিষয় বাড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে মানসিকদক্ষতা যাচাইয়ের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশরয়েছে। পিএসসির প্রস্তাবে প্রিলিমিনারির পাশাপাশি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষারপদ্ধতি এবং নম্বর বন্টন পরিবর্তনের জন্যও সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমান ২০০নম্বরের মৌখিক পরীক্ষার পাস নম্বর ৮০ থেকে ১০০ করার সুপারিশ রয়েছে। তবে এপরিবর্তন আনতে বেশি দেরি হলে শুধু প্রিলিমিনারিতে পরিবর্তন এনেই ৩৫তমপরীক্ষার আবেদন আহ্বান করা হতে পারে। এছাড়া পরীক্ষার বর্তমান আবেদন ফি ৫০০থেকে ৭০০ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রাধিকার কোটায়আবেদনকারীদের ফি-ও ৫০ থেকে ২৫০ টাকা বাড়ানো হচ্ছে।প্রিলিমিনারিতেনম্বর বাড়লে খাতা মূল্যায়নে সময়ক্ষেপণ ও জটিলতা বাড়বে কিনা-এমন প্রশ্নেরজবাবে পিএসসি চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ বলেন, যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের জন্যপ্রিলিমিনারি পরীক্ষা সংস্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন পদ্ধতিতেপরীক্ষার পূর্ণমান ও সময় বাড়ছে। কোন সমস্যা হবে না।জনপ্রশাসনমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে বিসিএস পরীক্ষা নেয়া হয় দ্য বাংলাদেশসিভিল সার্ভিস (এইজ, কোয়ালিফিকেশন অ্যান্ড এক্সামিনেশন ফর ডিরেক্টরিক্রুটমেন্ট) রুলস ১৯৮২ অনুযায়ী। এ রুলসটি বর্তমানে বাংলা ভাষায় রূপান্তরকরা হচ্ছে। এ রূপান্তরের মধ্যেই কিছু নিয়ম পরিবর্তন ও যোগ করার সুপারিশকরেছে পিএসসি। এ ধরনের একটি খসড়াও তৈরি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়এতে কিছু পরিবর্তন এনে চূড়ান্তও করেছে। সেটি শিগগিরই মন্ত্রিসভায় তোলাহবে।এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কামাল আবদুলনাসের চৌধুরী বলেছেন, পিএসসি বাছাই পরীক্ষা ৩০০ নম্বর করারপ্রস্তাব করেছিলো। বিষয়টি নিয়ে সচিব কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। এখনপরীক্ষার নম্বর ২০০ করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রশ্নপত্রেরধরনেও পরিবর্তন এনে বর্তমানের নৈর্ব্যক্তিকের (এমসিকিউ) পাশাপাশিপ্রাথমিকভাবে প্রার্থীদের লেখার ক্ষমতা আছে কি-না, তা যাচাই করার বিষয়টিওঅন্তর্ভুক্ত করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।নতুন পদ্ধতি বিষয়ে পিএসসিরএকজন সদস্য বলেন, প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অনেক প্রার্থী পাসকরলেও লিখিত পরীক্ষায় পাস করতে পারেন না অধিকাংশ প্রার্থী। অথচ এ পরীক্ষারপাস নম্বর ৫০। আবার পরীক্ষার্থী সংখ্যা বাড়ালে প্রার্থী বাছাইয়ের গোটাপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অনেক সময় প্রয়োজন হয়। তাই দক্ষ ও যোগ্য প্রার্থীবাছাই করতে প্রিলিমিনারিতে প্রশ্ন ও নম্বর বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।