স্টাফ রিপোর্টার: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির মর্টার শেলেমিয়ানমারের কমপক্ষে ৪ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিনজন। ৩০ মেমিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের সাথে গোলাগুলির সময় বিজিবি ওইমর্টার ছোড়ে।
ওদিকে, বাংলাদেশের মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে বার্মিজইউনাইটেড আর্মড ইউনিট (বিইউএইউ)। তারা টেকনাফ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামপর্যন্ত দখলে নিতে বদ্ধপরিকর। গোয়েন্দা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল এ খবরদিয়েছে অনলাইন বার্মা টাইমস। এতে বলা হয়, ইয়াঙ্গনের এক মেজর বলেছেন, মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে পশ্চিম গেটে বাংলাদেশীদের গতিবিধি লক্ষ্য করছেসে দেশের সেনারা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পেট্রোল টিম (বিজিবিপিটি) সামনেঅগ্রসর হলে তার কড়া জবাব দিতে প্রস্তুত বিইউএইউ। এতে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাদের তুলনায় বাংলাদেশে রয়েছে এক-চতুর্থাংশ সেনা সদস্য। ওইরিপোর্টে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কোনো ব্যবস্থা নিলেমিয়ানমারের ‘তাতমাড’ (সেনারা) টেকনাফ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যন্ততাদের দখলে নিতে বদ্ধপরিকর।
নেপিড’র সূত্রমতে, বার্মিজ ইউনাইটেড আর্মডইউনিটে রয়েছে আধাসামরিক বাহিনী, পুলিশ, বর্ডার গার্ড, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনীও গোয়েন্দা বিভাগ। ইতোমধ্যে তারা বাংলাদেশী বিজিবির অগ্রগমন প্রতিরোধেরজন্য মিয়ানমারের পশ্চিম গেট এলাকায় টহল দিচ্ছে। এ ঘটনায় পশ্চিমগেট (মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত) এলাকায় বসবাসকারী রোহিঙ্গারা ভয়াবহ একপরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। তাদের মিয়ানমারের বিইউএইউ’র ভারি জিনিসপত্র বহনকরতে বাধ্য করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা অধিবাসীরা আতঙ্কে রয়েছেন যে, তাদের ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার করতে পারে বিইউএইউ। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, বেশ কিছুরোহিঙ্গাকে বিইউএইউ’র জন্য নির্ধারিত পোশাক পরিয়ে পশ্চিমগেটে দায়িত্ব দেয়াহয়েছে। বার্মিজ বর্ডার পুলিশ যে সব স্থানে তাদের তাঁবু পেতেছে ভয়ে সে সবস্থানের মানুষ পাহাড়ি জঙ্গল থেকে ফিরে আসছেন না।
ওদিকে একই ওয়েবসাইট আরেকরিপোর্টে বলেছে, গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলেছে, বিজিবির মর্টারশেলের আঘাতেমিয়ানমারের কমপক্ষে ৪ সেনাসদস্য নিহত হয়েছে। সূত্র বলেছে, যখন বিজিবি নিহতনায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানের মৃতদেহ গত বুধবার আনার চেষ্টা করে তখনমিয়ানমারের বাহিনী তাদের ওপর প্রকাশ্যে তিন দিক থেকে গুলি করে বর্ডার পিলার৫২ এলাকায়। ওই সময় বিজিবি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলসৈয়দ আহমেদ আলী, আঞ্চলিক কমান্ডার (চট্টগ্রাম)। তার সাথে ছিলেন বিজিবিরঅন্য সিনিয়র কর্মকর্তা। এর মধ্যে ছিলেন কর্নেল ফরিদ হাসান খন্দকার, লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিকুর রহমান। মিয়ানমারের আক্রমণের জবাবে বিজিবিপাল্টা হামলা চালায়। এতে পাঁচ ঘণ্টা লড়াই চলে। দুপক্ষই ব্যবহার করেমর্টার, রকেট লঞ্চার ও ভারি মেশিন গান।
বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সদস্যদের ওপর মিয়ানমারের বর্ডারগার্ড পুলিশ (বিজিপি) কোনো প্রকার উস্কানি ছাড়াই গুলি চালিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটিরজনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বার্মা টাইমস’।‘বার্মা টাইমস এর একপ্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি সীমান্তে মিয়ানমারের বিজিপির গুলিতে মিজানুররহমান নামে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক নায়েক সুবেদার নিহতহয়েছেন। পরে মিজানুরের লাশ বিজিবি সদস্যরা নিতে আসলে কোনো প্রকার উস্কানিছাড়াই মিয়ানমারের বিজিপি তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়।বিজিবিওপাল্টা জবাব দেয়। তারা মিয়ানমারের বিজিপিকে লক্ষ্য করে মর্টার সেল নিক্ষেপকরে। এতে মিয়ানমারের চার সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। আহত হন আরো তিনজন সেনাকর্মকর্তা।এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা গোলাগুলি হয়।এতে দুপক্ষই মর্টার সেল, রকেট লাঞ্চার নিক্ষেপসহ ভারী অস্ত্রশস্ত্রব্যবহার করে। এরপর থেকে বাংলাদেশের বিজিবি মিয়ানমার সীমান্তে টহল জোরদারকরেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একটি সূত্রের বরাত দিয়েমিয়ানমারের সংবাদ মাধ্যম জানায়, বিজিবির পাল্টাআক্রমণে ঘটনাস্থলেই মিয়ানমারের ক্যাপ্টেন র্যাংকের দুজন সেনা কর্মকর্তানিহত হন। নিহত বাকি দুজন নন-কমিশন র্যাংকের।এছাড়াও বিজিবিরগুলিতে মিয়ানমারের তিন সেনা কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। তাদের মিয়ানমারেরমংডু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তারা এখনো চিকিৎসানিচ্ছেন।তবে মিয়ানমার সরকার তাদের সেনা কর্মকর্তাদের হতাহতেরবিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।