শুধু পে-অর্ডারে ৩০০ কোটি টাকার জালিয়াতি

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: রকারিখাতের বিশেষায়িত বেসিক ব্যাংকে অভিনব কৌশলে জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে একের পর এক জালিয়াতির ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। এরমধ্যে ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে শুধু পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকাতুলে নেয়ার নজিরও রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুরনামে একটি কলেজের অনুকূলেও পে-অর্ডারের মাধ্যমে নেয়া হয়েছে টাকা। ১২টিকোম্পানির নামে অনুমোদন করা ঋণের মধ্যে ৩০০ কোটি টাকা ৩৩টি প্রতিষ্ঠান ও ৮ব্যক্তির নামে ২০১২ সালের বিভিন্ন সময়ে তুলে নেয়া হয় পে-অর্ডারের মাধ্যমে।ওইসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো ১৭টি ব্যাংকের ২৪টি শাখা থেকে ওইসব টাকাতুলেছে। বেসিক ব্যাংকের ওপর পরিচালিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক তদন্তপ্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত বেসিকব্যাংকের চারটি শাখায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালিত তদন্তে প্রায় সাড়ে ৪হাজার কোটি টাকার জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্ত এখনথেমে আছে। তবে তদন্ত হলে আরও অনেক জালিয়াতির ঘটনা বেরিয়ে আসবে। কেননাকেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন পর্যন্ত খুব সীমিত পর্যায়ে তদন্ত করেছে।

কেন্দ্রীয়ব্যাংক সূত্র জানায়, ১২টি কোম্পানির নামে অনুমোদন করা ঋণের মধ্যে তারা ৩০০কোটি টাকা ৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে স্থানান্তর করেছে, যা বেআইনি।ওইসব টাকা এভাবে বিলি-বণ্টন করে পে-অর্ডারের মাধ্যমে তুলেছে যাতে ওই টাকারজন্য সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে শনাক্ত করা না যায়। একই দিনে বিভিন্ন কোম্পানিরনামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা তোলা হয়েছে। যেসব কোম্পানিকে ঋণ দেয়া হয়েছেসেগুলো তারা তাদের ব্যবসায়িক কাজে লাগানোর কথা। কিন্তু তা না করে তারাওইসব টাকার একটি অংশ নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে। প্রতিবেদনথেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ওইসব কোম্পানির নামে যথেষ্ট কাগজপত্র যেমননেই, তেমনি তাদের ঠিকানার সঙ্গেও বাস্তবের মিল নেই। ঋণগুলো কৌশলে অনুমোদনকরানোর পর তা ছোট অংকে বিভিন্ন কোম্পানির নামে স্থানান্তর হয়েছে। কেন্দ্রীয়ব্যাংক থেকে ঋণের এই স্থানান্তরের ব্যাপারেও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ওইসব ঋণেরপ্রায় সবই কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি হিসাবে শনাক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।

এব্যাপারে বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল সোবাহানবলেন, কোনো ক্ষেত্রে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ঋণ দেয়ার সিস্টেমরয়েছে। যেমন এলসি পেমেন্টে অনেক সময় এ ধরনের ঋণ দেয়া হয়। আর বেনামিপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে তিনি বলেন, যে প্রতিষ্ঠান ঋণ নিয়েছে, তার একটি ট্রেডলাইসেন্স রয়েছে। রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টকের বৈধ কাগজ রয়েছে। অতএব এপ্রতিষ্ঠানকে বেনামি বলা যায় না। ঋণ দেয়ার নিয়ম না মানলে বাংলাদেশ ব্যাংকঅথবা ব্যাংকের ইন্টারনাল অডিটের আপত্তি থাকে। আর ওই ঋণের ব্যাপারে এই দুইপ্রতিষ্ঠানের আপত্তি ছিলো কিনা তা বিবেচনায় নিতে হবে।প্রতিবেদন থেকেপ্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, কোনো সময় ঘটনার তদন্ত হলে ঋণের টাকার যাতে কোনোহদিস পাওয়া না যায় সেজন্য তারা হরেকরকম কৌশলে টাকা তুলেছে। বিভিন্ন তারিখেছোট ছোট পে-অর্ডারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে টাকা তোলাহয়েছে।