স্টাফ রিপোর্টার: র্যাব-১৪’রভৈরব ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর এজেডএম সাকিব সিদ্দিক, এসআই মো. এনামুল হকসহর্যাবের ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যামামলা করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরেব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহারেরআদালতে এ মামলা করা হয়। নবীনগর উপজেলার বগডহর গ্রামের হাজী রহিছ উদ্দিনেরছেলে শাহনুর আলমকে র্যাব-১৪’র ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা গ্রেফতার করে নৃশংসনির্যাতন চালান। পরে পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাইমেহেদী হাসান বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন।
বাদী মেহেদী হাসান মামলার আরজিতেউল্লেখ করেন, গত ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টায় শাদা পোশাক পরিহিত তিনব্যক্তি বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে তার চাচা সামছুল হকের কাছে রহিছমেম্বারের ছেলে শাহনুর আলম বাড়িতে আছে কিনা জানতে চায়। সামছুল হক জানান, শাহনুর বাড়িতে আছে। তখন তারা রহিছ উদ্দিনের ঘরে প্রবেশ করে পানি আনতে বলে।শাহনুর পানির জগ ও গ্লাস নিয়ে আসার সাথে সাথে অজ্ঞাতনামা আরও ছয় ব্যক্তিশাদা পোশাকে ঘরে প্রবেশ করে। দ্রুত তারা শাহনুরের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে এবংতাকে তুলে নিয়ে যায়। তাকে নবীনগর থানায় এনে র্যাবের গাড়িতে শুইয়ে রাখা হয়।ওই দিন সন্ধ্যায় শাহনুরকে ভৈরব ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২৯ এপ্রিলরাত ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর এজেডএম সাকিব সিদ্দিকশাহনুর আলমের ওপর নির্যাতন চালায়। নির্মম ও নৃশংস নির্যাতনে শাহনুরসংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে ৮টায় জ্ঞান ফিরে এলে ৩০ এপ্রিল তাকে নবীনগরথানায় এনে পুলিশ হেফাজতে দিয়ে যায়। এ সময় নবীনগরের মৃত শরফত আলীর ছেলে আবুতাহের মিয়াকে থানায় ডেকে এনে তাকে বাদী করে শাহনুরসহ কয়েকজনকে আসামি করেমামলা করা হয়। মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১ মে কোর্টে চালান দেয়া হয়।শাহনুর আলমের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কারা কর্তৃপক্ষ ৪মে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে ৬ মে তাকেকুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহনুরেরমৃত্যু হয়। সুরতহাল রিপোর্টে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আরজিতেউল্লেখ করা হয় শাহনুরের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোনো থানা বা আদালতে মামলানেই। শাহানুরের মৃত্যুর পর তার স্বজনরা নবীনগরে র্যাবের বিরুদ্ধেমানববন্ধন ও ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সাংবাদিকসম্মেলন করেন।