পুকুর খননের অপরাধেজরিমানা :৩ দিনের মধ্যে পুকুর ভরাটের নির্দেশ
বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার এককালের ঐতিহ্যবাহী নদী চিত্রা আজ মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। আর এসুযোগে এলাকার প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধভাবে দখল করে চাষাবাদ ও খনন করেছে বড়বড় পুকুর। বিষয়টি জানতে পারে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে তিতুদহ ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া চিত্রা নদীতে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে সরকারি নদীর জমি দখল করে পুকুর খনন করার অপরাধে গ্রামের ৮ভূমিদস্যুকে করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। জব্দ করা হয়েছে পুকুর খনন করার কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার মেশিন। অপরদিকে ৩ দিনের মধ্যে খননকৃত পুকুর ভরাট করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারআবুল আমিন।
বংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদী এদেশের প্রাণ। কালের আবর্তে বৈরি প্রকৃতির করণে নদীনালা আজ মৃত প্রায়। আর এ সুযোগে নদীর সীমানায় বসবাসকারী ভূমিদস্যুরা ক্ষমতার দাপটে জবরদখল করে কেউ করছেন চাষাবাদ আবার কেউ করছেন পুকুর খনন। চুয়াডাঙ্গা জেলার মাথাভাঙ্গা নদীর শাখা নদী চিত্রা। চিত্রা শুকিয়ে যাওয়ায় এক শ্রেণির ভূমিদস্যুরা নদীকে গ্রাস করে ফেলেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় জেলা সদরের তিতুদহ ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া চিত্রানদীটি আজ সবই বেদখল হয়ে গেছে। চাষাবাদের একপর্যায় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তেঘরি গ্রামের আজিজুল হক, আব্দুল করিম, মহেন্দ্র ঠাকুর, জাহিদুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, বজলুর রহমান, ছমির উদ্দিন ও আব্দুল ওহাব নিজেদের বাড়ির সামনের নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন করেছেন বড় বড় ৮টি পুকুর। বিষয়টি জানতে পেরেসদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারআবুল আমিন গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন পুকুর কাটা চিত্রা নদীর ধারে। এসময় সরকারি জমি জবর দখল করে পুকুর খনন করার অপরাধে মহিদুল গংকে বালুমহল ও মাটি কাটা অপরাধ আইন ২০১৪’র ৪(ছ) ধারা মোতাবেক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জব্দ করেন পুকুর খনন কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার মেশিন। ৩ দিনে মধ্যে খননকৃত পুকুর ভরাট করার নির্দেশও দেন তিনি। নির্দেশ অমান্য করা হলে পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন দখলদারদের। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, অফিস সহকারী আইনদ্দিন, সার্ভেয়ার ইকতিয়ার উদ্দিন, কামাল হোসেন, তিতুদহ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই ওয়ালিউর রহমান, ইউপি সদস্য জাকির হোসেন প্রমুখ। এদিকে চিত্রা নদী দখলমুক্ত হওয়ায় এলাকাবাসী ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এসময় উপজেরা নির্বাহী অফিসার আবুল আমিন বলেন, পর্যায়ক্রমে চিত্রা নদী ভূমিদস্যুদের হাত থেকে দখলমুক্ত করেহারিয়ে যাওয়া নদীর বহমান এবং সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হবে।