গাংনী প্রতিনিধি: আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী খাসমহল গ্রাম আবারো অশান্ত হয়ে উঠেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ-বিএনপি দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এসময় কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণের পাশাপাশি দোকান ও বাড়িঘরে হামলা হয়। বর্তমানে গ্রামটিতে বিএনপি পক্ষের পরিবার পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ববিরোধের জের ধরে গতকাল সকালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। কিছু সময় ধরে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। উভয়পক্ষ দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় বেশ কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আশপাশের গ্রামেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিরোধ করতে গিয়ে টিকতে না পেরে একপর্যায়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় বিএনপি নেতাকর্মী সমর্থকরা। এ ঘটনায় আহত হন কয়েকজন। এদের মধ্যে জয়নব আলী (৪২), ইসমাইল হোসেন (৬২), সামসুন্নাহার (৪৮) ও ছইমন খাতুনকে (৪৩) মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জয়নবকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন বলে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় বিএনপি সমর্থকরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেলে আওয়ামী লীগ পক্ষের লোকজন কয়েককটি বাড়ি ও দোকানে হামলা চালায়। বিএনপি সমর্থক পল্টু মিয়ার গার্মেন্টস, লিয়াকত আলীর চায়ের দোকান, হাম্মান আলী ও হাফিজুল ইসলামের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় লুটপাটও করা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫-৭টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। খাসমহল ছাড়াও আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ বোমার শব্দ শুনতে পেয়েছে। তবে বোমা বিস্ফোরণের দায় উভয়পক্ষের লোকজন একে অপরের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাংনী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই ফারুকুল ইসলাম জানান, স্থানীয় লোকজন বোমার শব্দ শুনেছে। কিন্তু বোমা বিস্ফোরণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।এদিকে ঘটনার পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মী সমর্থকদের বাড়িতে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে। হামলার আশঙ্কায় দুপুরের পর থেকে ওই পরিবারগুলোর নারী সদস্যদের অনেকেই জিনিসপত্র নিয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম জানান, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে গতরাত পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় মামলা কিংবা অভিযোগ দায়ের করেনি।