কোটি টাকার ক্ষতি :আহত ৫ :সর্বশান্ত ২০ পরিবার
শাহনেওয়াজ খান সুমন:ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ৫০ বিঘা জমির পানবরজ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার জালালপুর গ্রামে এ অগ্নিকাণ্ডে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে নিঃস্ব হয়ে গেছে অন্তত ২০টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, দুর্বৃত্তরা শত্রুতাবশত তাদের পানবরজে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষি ও এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার জালালপুর গ্রামের শতদল রায়ের বরজ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন সারা মাঠের পানবরজে ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র আধাঘণ্টার ব্যবধানে একে একে ৫০টি বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনে মাঠের একশটি মেহগনি গাছ, ৫০টি খেজুর গাছ, এক বিঘা কলাগাছ ও বেশ কয়েকচি কাঁঠালগাছও ভস্মীভূত হয়। এসময় স্থানীয়রা যে যার মতো পানি, বালি, বাঁশ-লাঠি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে। আগুন নেভাতে গিয়ে ৫ গ্রামবাসী আহত হন। এ অগ্নিকাণ্ডে গ্রামের ঝন্টু রায়, মন্টু রায়, মানু, শিক্ষু রায়, শতদল রায়, মিজানুর রহমান, সলেমান আলী, গৌতম কুমার, নরত্তম রায়, তিরবু মাস্টার, অরবিন্দ কুমার, বিশ্বজিৎ কুমার, নিশিত কুমার, সিন্দু রায়, জয় রায়, কৃষ্ণ পদ, কায়েম আলিসহ অন্তত ২০টি কৃষক পরিবার সর্বশান্ত হয়েছে। এর সাথে জড়িত প্রায় ৪শ শ্রমিকও দিশেহারা। আর আগুন লাগার খবরে পানবরজ মালিকরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মাত্র ১৮ কাঠা জমি লিজ ও ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে পানবরজ করেছেন গ্রামের গৌতম কুমার। বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার তিনি সর্বশান্ত হয়ে গেছেন। ক্ষেতের পাশে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলছিলেন, আমার পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। ছিলেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত শতদল রায় অভিযোগ করেন, দুর্বৃত্তরা শত্রুতাবশত তাদের পানবরজে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। আর ফায়ার সার্ভিসেরকর্মীরা দেরি করে আসায় আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে কোটচাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পানির অভাবে আগুন নেভাতে দেরি হয়েছে বলে কোটচাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার আলাউদ্দীন খান।
এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ নবী নেওয়াজ ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের খোঁজখবর নেন এবং সরকারি সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সংসদ সদস্য বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খুব দ্রুত সহায়তা দেয়া হবে। পানচাষিরা এ ক্ষতি যাতে দ্রুত কাটিতে উটতে পারেন সেজন্য তিনি ব্যবস্থা নিবেন। কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবপ্রসাদ পাল বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করার কাজ চলছে। তাদের সরকারি সহযোগিতা দেয়া প্রয়োজন বলে তিনি জানান।