স্টাফ রিপোর্টার: প্রশাসনযন্ত্রেরকেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়সহ অধিকাংশ সরকারি দফতরে মিটিং (বৈঠক) করেই দিন পারকরেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে এটি যেনস্থায়ী সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই মিটিংয়ের অজুহাতে দিনের পরদিন ফাইলে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকেন কর্মকর্তারা। এমন পরিস্থিতিতেএকরকম বাধ্য হয়েই ফাইল ছাড়ানোর তদবিরে আসা সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তির শিকারহতে হয়। কর্তাব্যক্তিদের সাথে দেখা করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতেহয়। কখনও দেখা হয়, আবার কখনও দু-তিনদিন ঘুরেও তাদের সাক্ষাৎ মেলে না। আরফাইল আটকে টাকা আদায়ের কোনো সুযোগ থাকলে তো কথাই নেই। এক্ষেত্রে একশ্রেণিরকর্মকর্তাদের ম্যানেজনা করে ফাইল ছাড়ানো রীতিমতো দুরূহ কাজ।
ভুক্তভোগীসেবাপ্রার্থীদের হয়রানি ও দুর্ভোগের বিষয়ে একাধিক অভিযোগ পাওয়ার পরথেকে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও দফতরে অনুসন্ধানচালানো হয়। এ অনুসন্ধানে ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগঅভিযোগেরই সত্যতা মিলেছে। তবে এমন তথ্যও পাওয়া গেছে, সারাদিন টানাতিন-চারটি মিটিং করার পর পদস্থ কর্মকর্তাদের অনেককে অফিস সময়ের পরও কাজকরতে হয়। কাজের চাপ সামাল দিতে কেউ সন্ধ্যা কিংবা রাত অবধি অফিস করেন। আবারকেউ কেউ জট কমাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফাইল বাসায় নিয়ে যান। তবে এমনকর্মকর্তার সংখ্যা খুবই নগণ্য। ফলে সহনীয় মাত্রায় আনা যাচ্ছে নাসেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ।
বিদ্যমান সংকট নিরসনে অফিস সময়ে কমপক্ষেদুঘণ্টা মিটিং ফ্রি রাখা অথবা সপ্তায় একদিন মিটিংলেস ডে ঘোষণা করার জোরালোদাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিককর্মকর্তা। পাশাপাশি তারা বেশি জোর দিয়েছেন ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের ওপর।তাদের মতে, মন্ত্রণালয় শুধু পলিসি নির্ধারণ করবে। আর বেশির ভাগ সিদ্ধান্তবাস্তবায়ন করতে হবে মাঠ প্রশাসনের মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, বিএনপিনেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সময় সচিবালয়ে প্রতি মঙ্গলবার মিটিংলেস ডে ঘোষণাকরে একটি পরিপত্র জারি করেছিলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরবর্তীকালে ফখরুদ্দীনআহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দু বছর এ পরিপত্রটি কার্যকর ছিলো। অতি জরুরিপ্রয়োজন ছাড়া মঙ্গলবারে মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলোতে কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হতোনা। এ দিনটিতে ফাইল ছাড়ের কাজ করতেন আমলারা। কিন্তু আওয়ামী লীগনেতৃত্বাধীন বিগত মহাজোট সরকার ও বর্তমান সরকার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওইপরিপত্র বাতিল না করলেও বাস্তবে এর কোনো কার্যকারিতা নেই।
ভুক্তভোগীদেরপ্রস্তাবের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সাদতহুসেইন। তবে বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞারমতামত ভিন্ন। তিনি মনে করেন, ফাইল ছাড়ানোর জন্য সচিবালয়ে সাধারণ মানুষেরআসার প্রয়োজনই নেই। সেবাপ্রার্থীদের সেবা প্রদানের বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত মাঠপর্যায়ের অফিসে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। মন্ত্রণালয়ে হতে হবে শুধুনীতিনির্ধারণী কাজ।
সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল ১০টা বাজলেই সচিবালয়েরদফতরগুলোতে মিটিং করার ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বিশেষ করে বেলা ১১টা থেকেগুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোতে মিটিং ছাড়া যেন কর্মকর্তাদের আর কোনো কাজনেই। প্রায় প্রতিদিনই চলে সিরিজ মিটিং। বলা যায়, একটা শেষ করে আর একটা।কোনো মিটিংয়ে মন্ত্রী সভাপতি, আবার কোনটিতে সচিব। মন্ত্রীর মিটিং দুটিথাকলে সচিবের থাকে তিনটি। এছাড়া অনির্ধারিত মিটিং তো থাকেই। এভাবে টানামিটিং করে কর্মকর্তারা রীতিমতো হাঁফিয়ে ওঠেন। অনেকে বাসা থেকে আনা দুপুরেরখাবারও সময়মতো খেতে পারেন না। এতে করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা না পারেনটেবিলে জমে থাকা ফাইলের কাজ শেষ করতে, না পারেন অপেক্ষমাণ দর্শনার্থীদেরসময় দিতে। এভাবেই বেলা বয়ে যায়। এরপর অফিস ত্যাগ করেন অধিকাংশ কর্মকর্তারা।তবে যেসব কর্মকর্তা কাজের প্রতি খুব বেশি আন্তরিক, তারা ফাইল দেখার কাজকরেন বিকাল ৫টার পর।
মিটিংয়ে আক্রান্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগ: অনুসন্ধানেজানা গেছে, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসনমন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগসহ বেশির ভাগ মন্ত্রণালয়ে প্রায় দিনভর মিটিং লেগেথাকে। উল্লিখিত মন্ত্রণালয়গুলোতে রোববার (৪ মে) গড়ে মিটিং ছিলো ৪টি করে। এরমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের মিটিং ছিল ৭টি। সকাল ১০টা থেকেশুরু হয়ে টানা চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। মাঝখানে এক ঘণ্টার জন্যও বিরতিখুঁজে পাওয়া যায়নি। একই দিন স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিবের ৫টি, স্বরাষ্ট্রেরসিনিয়র সচিবের ৩টি এবং শিক্ষা সচিবের ছিল ৪টি মিটিং। কোনো কোনো সচিবেরদফতরে দর্শনার্থীদের সাক্ষাতের জন্য যে সময়সূচি নির্ধারিত ছিল, সেই সময়েওঅনুষ্ঠিত হয়েছে একাধিক মিটিং। যার কারণে প্রভাবশালী দর্শনার্থী ছাড়া সাধারণদর্শনার্থীদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করা নিয়ে পোহাতে হয় চরমবিড়ম্বনা। এরপরও একের পর এক মিটিং সামাল দিয়ে কর্মকর্তারা যখন সাক্ষাৎ দেন, তখন সেবাপ্রার্থী দর্শনার্থীদের অভিযোগ কিংবা অনুরোধ শোনার মতো ধৈর্য থাকেনা। আবার সচিবালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধান অনুযায়ী সাধারণ দর্শনার্থীরাদুপুর ১২টার আগে প্রবেশ করতে পারেন না। ফলে দুপুরের পর মিটিং থাকলেসাক্ষাতের সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
কালক্ষেপণ: আর্থিক সংক্রান্ত ফাইলবা যেসব ফাইলের সাথে টাকা-পয়সা, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিল পরিশোধের যোগসূত্রথাকে, সেসব ফাইল আর চলতে চায় না। ব্যাহত হয় ফাইল ছাড়ের স্বাভাবিক গতি।অহেতুক ফাইলের ওপর চলে নানা গবেষণা। বিধিবিধান ও আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষারদোহাই দিয়ে কালক্ষেপণ করা হয় ফাইল ছাড়ে। এ ধরনের ফাইল উঠতে ও নামতে ঘাটেঘাটে বাধাপ্রাপ্ত হয়। শুধু ফাইল নয়, এ সংক্রান্ত চিঠির ক্ষেত্রেও একই ধরনেরহয়রানির শিকার হতে হয় সেবাপ্রার্থীদের।
ভোগান্তির শিকার: সরেজমিন দেখাগেছে, একজন সেবাপ্রার্থী ব্যবসায়ী যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে তার ফাইল নিষ্পত্তিকরতে গিয়ে চরম হয়রানির শিকার হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এইব্যবসায়ী যুগান্তরকে জানান, তার ব্যবসায়িক পণ্যের টাইপ (ধরন) অনুমোদনসংক্রান্ত একটি ফাইল ১৩ এপ্রিল বিআরটিএ থেকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে আসে।বুয়েটের মতামতসহ সব শর্ত পূরণ করায় প্রস্তাবটি অনুমোদন করা যায়- এই মর্মেসুপারিশ করে ফাইলটি সড়ক বিভাগে পাঠিয়ে দেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান। ওইদিনসকালেই সচিব দফতরে জমা দেয়া ফাইলটি নিচে নামতে লেগে যায় চারদিন। ১৭ এপ্রিলবৃহস্পতিবার বিকালে ফাইল শাখায় গেলেও সেদিন এ নিয়ে কোনো কাজ হয়নি। দুদিনেরসাপ্তাহিক ছুটি শেষে ১৯ তারিখ ফাইল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নোট নেয়ার কাজশুরু হয়। জোর তদবিরের পরও শাদামাটা সহজ এ ফাইল শাখা থেকে তুলতে আরও চারদিনপার হয়। প্রস্তাব অনুমোদনের পক্ষে মতামত দিয়ে ২১ এপ্রিল ফাইলটি সংশ্লিষ্টযুগ্মসচিবের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু ২২ এপ্রিল ৫টি কোয়েরিসহ (জিজ্ঞাসা) সচিব দফতর থেকে ফাইলটি শাখায় নেমে আসে। কোয়েরির জবাব চেয়ে ২৩এপ্রিল বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু যেসব কোয়েরি করা হয়েছে, সেগুলোর জবাব ওই ফাইলের মধ্যেই ছিলো। ২৪ এপ্রিল বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর কোনোপ্রকার হয়রানি না করে দ্রুত ফাইলটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন যোগাযোগমন্ত্রীওবায়দুল কাদের। মন্ত্রীর নির্দেশের পর ওইদিন বিকালের মধ্যে ফাইলটিনিষ্পত্তি করা হয়। এজন্য বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারারীতিমতো মন্ত্রণালয়ে এসে অফিস করেন এবং বিকালের মধ্যে সচিব পর্যন্তঅনাপত্তির চিঠি দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন হয়ে যায়। দুদিনের সাপ্তাহিক ছুটিশেষে মন্ত্রী ফাইলে চূড়ান্ত অনুমোদন দেন ২৭ এপ্রিল।
ওইদিন অনাপত্তি পত্রজারির জন্য চিঠির খসড়া শাখা থেকে উত্থাপন করার পর যুগ্মসচিব কোয়েরি দিয়েবলেন, অনাপত্তি দেয়ার এ ধরনের পূর্ব নজির আছে কি-না?এক ঘণ্টার মধ্যে শাখাথেকে কোয়েরির জবাব দেয়া হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ছুটি নিয়ে বাইরে চলে যান।পরদিন ২৮ এপ্রিল বিকল্প কর্মকর্তার কাছে ফাইলটি পাঠানো হয়। কিন্তু ওইদিনতিনি সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা চারটি মিটিংয়ে যোগ দেন। সঙ্গতকারণেইসেবাপ্রার্থীকে পোয়াতে হয় চরম ভোগান্তি। সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থেকেওসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে দেখা করতে পারেননি ওই ব্যবসায়ীর প্রতিনিধি।এরপর মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের জোরালো হস্তক্ষেপে পরদিন ২৯ এপ্রিলঅনাপত্তি পত্রটি ইস্যু করা হয়।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাবলেন, যে ফাইলটি ১৩ এপ্রিল এসে ১৫ এপ্রিলই নিষ্পত্তি হতে পারতো, সেখানে ফাইলনিষ্পত্তি হতে পনের দিন পার হয়েছে। আর মন্ত্রী চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার পরএকটি চিঠি ইস্যু হতে অহেতুক চারদিন চলে গেছে। কিন্তু প্রভাবশালী মহলের জোরতদবির ও মন্ত্রীর কঠোর অনুশাসন না থাকলে এ ফাইল ৬ মাসেও নিষ্পত্তি হতো নাবলে মন্তব্য করেন এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এটিই হলো সরকারি দফতরগুলোরবাস্তবচিত্র। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা থাকলে এ ফাইল মন্ত্রণালয়েআসার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। বিআরটিএ চেয়ারম্যানই চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তিকরতে পারতেন।
অকার্যকর সচিবালয় নির্দেশিকা: ফাইল নিষ্পত্তি করার জন্যসচিবালয় নির্দেশিকা রয়েছে, যা অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক। যেখানে শাখাপর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে একেবারে সচিব/মন্ত্রী পর্যন্ত ফাইলনিষ্পত্তির সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। নির্দেশনা মোতাবেক শাখা পর্যায়ে৭২ ঘণ্টা, যুগ্মসচিব/অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ে ৪৮ ঘণ্টা এবং সচিব থেকেতদূর্ধ্ব পর্যায়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি ফাইল নিষ্পত্তি হতে হবে। কিন্তুবাস্তবচিত্র খুবই হতাশাব্যঞ্জক। হাতেগোনা কিছু নীতিবান কর্মকর্তা ছাড়াবাকিরা সবাই ফাইল ধরে রাখার জন্য এক ধরনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। সম্প্রতিজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী তারমন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন শাখা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি দেখতে পান বেশির ভাগফাইলই সময়মতো নিষ্পত্তি করা হয়নি। এরপর তিনি দ্রুত ফাইল নিষ্পত্তি করতে তারমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের দেন কঠোর নির্দেশ।
সাবেক ও বর্তমানমন্ত্রিপরিষদ সচিব যা বললেন: জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সাদতহুসেইন শনিবার বলেন, সারাদিন মিটিং করে সময় পার করাযাবে না। সেবাপ্রার্থী দর্শনার্থীদের জন্য সময় বের করে দিতে হবে। ড. সাদতবলেন, তিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সপ্তায় মঙ্গলবার মিটিংলেস ডে ঘোষণাকরেছিলেন। কিন্তু এখন সে ব্যবস্থা নেই কেন?এটা অবশ্যই হওয়া উচিত। প্রয়োজনেদুপুরের আগে বেলা ১২টা পর্যন্ত ২/৩ ঘণ্টা মিটিং ফ্রি রাখার সিদ্ধান্ত নিতেহবে।
বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞারোববার বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মিটিংলেস ডে ঘোষণাকরা ঠিক হবে না। স্ব স্ব মন্ত্রণালয় নিজস্ব একটা পদ্ধতি বের করে নিতেপারে। তবে তিনি সচিবালয়ে এভাবে সেবাপ্রার্থী কিংবা তদবিরের জন্য দর্শনার্থীআসার পক্ষে নন। তিনি মনে করেন, মন্ত্রণালয়/বিভাগে মিটিং তো হবেই। মিটিংকরে পলিসি প্রণয়ন করাই মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজ। প্রকৃত সমস্যা এটি নয়, অন্য জায়গায়। বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের হাতে ধরেরাখা হয়েছে। এজন্য সেবাপ্রার্থীদের সচিবালয়ে ছুটতে হয়। তিনি বলেন, শুধুমন্ত্রণালয় কেন, অনেক সিদ্ধান্ত অধিদফতরের হাতেও রাখা উচিত নয়। তার মতে, বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার মাঠ পর্যায়ে ছেড়ে দিতে হবে। সেখানেযারা সিদ্ধান্ত দেবেন তারা তো আইন-কানুনের মধ্যেই করবেন। জবাবদিহিতাওথাকবে। তাহলে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে বাধা কোথায়? মন্ত্রিপরিষদ সচিববলেন, সম্প্রতি সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের ওপর বেশিজোর দিয়েছেন। তারা সেই পথেই এগোচ্ছেন। তার মতে, কার্যকর বিকেন্দ্রীকরণ করতেপারলে সচিবালয়ে দর্শীনার্থী আসা কমে আসবে।
আশার আলো: জনপ্রশাসনমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে যথাসম্ভব অনেক ক্ষমতা দফতর ও সংস্থার হাতে মাঠপর্যায়ে ছেড়ে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কাজ শুরুকরেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেয়ারক্ষেত্রে মিটিং করা তো অনিবার্য বিষয়। তবে কিভাবে মিটিং সংখ্যা কিছুটাকমানো যায় সেটি বিবেচনা করে দেখা যেতে পারে। কিন্তু সংকটের সমাধান করতে হলেক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই।