মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ রেলস্টেশনের রেলগেটের পয়েসম্যান আবুল কালাম ১০ টাকা ঘুষের বিনিময়ে ঝুঁকি নিয়ে দ্রুতগামী ট্রেনের সামনে যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে দেন। এ সময় অল্পের জন্য রক্ষা পায় একটি যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপ। এলাকাবাসী পয়েসম্যান আবুল কালামের অপসারণের দাবি তুলেছে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ রেলগেটের পয়েসম্যান আবুল কালাম (৫০) ১০ টাকা ঘুষের বিনিময়ে একটি যাত্রীবাহী বাসকে দ্রুতগামী ট্রেনের সামনে ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে একটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি মিনি ট্রাক। গতকাল সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা রূপসা ট্রেনের খবর হলে মুন্সিগঞ্জ রেলগেটের গেট ফেলেন পয়েসম্যান আবুল কালাম। চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা একটি লোকাল বাস রেলগেটে থামলে বাসের কন্ট্রাক্টর রেলগেটের দিকে এগিয়ে যায়। ফিস ফিস করে কিছু বলেন পয়েসম্যান আবুল কালামকে। আর অমনি বাসটি এগিয়ে আসে গেটের দিকে। বাসটি এগিয়ে আসতেই হঠাৎ করেই গেট খুলে দেন আবুল কালাম। বাসের হেলপার আবুল কালামের পকেটে ভরে দেন ১০ টাকা। বাসটি এগিয়ে যায় পেছনে আর একটি মিনি ট্রাক। ট্রেন তখন মুন্সিগঞ্জ রেলস্টেশনের সিগনাল অতিক্রম করেছে। মুহূর্তের মধ্যে ট্রেন চলে আসে। যাত্রীবাহী বাসটি দ্রুত গেট অতিক্রম করে। সাথে সাথে ফুঁসে ওঠে প্রতক্ষদর্শীরা। আবুল কালামকে অপসারণের দাবি জানাতে থাকে।
এলাকাবাসী আরো জানায়, পয়েসম্যান আবুল কালামের এ ঘটনা প্রতিদিনের। কেউ কিছু বললে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। কোনো কোনো সময় গেট না দিয়ে ঘুমাতে থাকেন। আর রাতে তো গেট দেয়ার কথা মনেই থাকে না। রেলগেটে কোনো গেটম্যান না থাকায় পয়েসম্যান কে দিয়ে গেটম্যানের দায়িত্ব পালন করানো হয়। পয়েসম্যান আবুল কালাম সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গাড়িপ্রতি ১০/২০ টাকা ঘুষের বিনিময়ে বাস ট্রাক ও বিভিন্ন পরিবহনকে বিপদের মুখে গেট তুলে ছেড়ে দেন। অনেক সময় ট্রেন আসার ২০/৩০ মিনিট আগে গেট ফেলে দিয়ে নিজের ফয়দা লুটে নেন। এভাবে প্রতিদিন ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন তিনি। মুন্সিগঞ্জ বাজারে জ্যাম লেগে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশকে হিমসিম খেতে হয় জ্যাম ছাড়াতে। যার সচিত্র প্রতিবেদন আগেই দৈনিক মাথাভাঙ্গায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
এলাকবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে গেলে গতকাল সকালে মুন্সিগঞ্জ রেলগেটে তার সত্যতা মেলে এবং ১০ টাকার বিনিময়ে একটি বাসকে দ্রুতগামী ট্রেনের মুখে ছেড়ে দেয়া দেখা যায়। এ ব্যাপারে পয়েসম্যান আবুল কালামকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি টাকা নিতে চাইনি আমাকে জোর করে টাকা পকেটে ভরে দিয়ে গেছে। কিন্তু দ্রুতগামী ট্রেনের সামনে গেট তুলে দিলেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলেন, যা লিখবেন লিখেন আমি কিছুই বলতে পারবো না। মুন্সিগঞ্জ রেলগেটের পয়েসম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছে এলাকাবাসী।