আবারও হামলা : ঘুমন্ত পিতা ও শিশুকন্যাকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে দুর্বৃত্তরা

দামুড়হুদার জয়রামপুরে একের পর এক হামলা : শঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার জয়রামপুরে একের পর এক হানা দিয়ে ঘুমন্ত মানুষকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করলেও পুলিশ ধরতে পারেনি হামলাকারীদের। গতপরশু রোববার রাতেও শিশুকন্যাসহ তার পিতাকে ঘুমন্ত অবস্থায় নিজ ঘরের বিছানায় ক্ষতবিক্ষত করেছে দুর্বৃত্তরা।

ধারালো অস্ত্রের কোপে ক্ষতবিক্ষত দরিদ্র মোফাজ্জেল হোসেন মোফা ও তার শিশুকন্যা খাদিজাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। এদেরকে দ্রুত ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। অর্থের অভাবে ঢাকায় নেয়া সম্ভব হয়নি। মোফার স্ত্রী তুলা মিলের শ্রমিক সুখতারা বলেছেন, পেটই চলে না। চিকিৎসা করাবো কীভাবে? ঘটনার পর গ্রামের লোকজনের নিকট হাত পেতে পাওয়া তিনশ টাকা দিয়ে কোনোরকম কয়েকটি ওষুধ কিনে দিয়েছি। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেয়ে ও তার পিতাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যথাযথ চিকিৎসা দিতে না পারলে শেষ পর্যন্ত ওদের একটি করে হাত কেটে শরীর থেকে বাদ দিতে হতে পারে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার জয়রামপুর ডাক্তারপাড়ার মৃত ফরজন আলীর ছেলে মোফাজ্জল হোসেন মোফা (৩৬) ভ্যান চালাতেন। করিমনের ধাক্কায় তার পা গুঁড়িয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি তার বাড়ির পাশের রাস্তায় বসে পাপড়ভাজা বিক্রি করেন। আর স্ত্রী সুখতারা চুয়াডাঙ্গা হাটকালুগঞ্জের একটি তুলামিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। গতপরশু রাতে এদের ৪ বছর বয়সী শিশুকন্যা খাদিজাকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। মধ্যরাতে একব্যক্তি ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা মোফা ও তার শিশুকন্যাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে হামলাকারী সটকে পড়ে। প্রতিবেশীর ছুটে আসে। রক্তাক্ত পিতা ও কন্যাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। এ ঘটনার পর গ্রামের সাধারণ মানুষ ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে প্রশ্ন তুলে বলে, কে ঘটাচ্ছে একই ধরনের ঘটনা। মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে একই কায়দায় কুপিয়ে একজনকে খুনসহ রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। গত ২৫ এপ্রিল রাতে জয়রামপুর বরোইপাড়ার ভাজা বিক্রেতা বুদো ও তার স্ত্রীকে ঘুমন্ত অবস্থায় কুপিয়ে ও বাঁশ দিয়ে মেরে রক্তাক্ত জখম করে। বুদোকে পঙ্গুতে নিতে হয়েছে। এর আগের রাতে ২৪ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে দোকানি আবুল কাশেমকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তার অবস্থাও আশঙ্কামুক্ত নয়। ২২ এপ্রিল রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় কুপিয়ে খুন করা হয় জয়রামপুর চৌধূরীপাড়ার বাসিন্দা আমজাদকে। একের পর এক কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করলেও ভেটে গোছের ব্যক্তিকে পুলিশ ধরতে পারছে না। নাকি ধরছে না? এ প্রশ্ন স্থানীয়দের মাঝে তীব্রতর হয়ে উঠেছে।

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সিকদার মশিউর রহমানের সাথে যোগাযোগে করা হলে তিনি বলেছেন, হামলাকারীকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। প্রায় প্রতিরাতেই জয়রামপুরে টহল পুলিশ থাকছে। এরপরও হামলার ঘটনা ঘটছে। আমরা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।