ঝিনাইদহ অফিস: নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নেতৃতাধীন জাতীয় পার্টির কেন্দ্র ঘোষিত ঝিনাইদহ জেলা কমিটি প্রত্যাখান করেছে দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। সম্মেলন ছাড়া কেন্দ্র থেকে এভাবে কমিটি করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা সম্মেলনের মাধ্যমে তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় পার্টির জেলা কমিটি গঠন করার দাবি জানিয়েছেন। এ পকেট কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মাঝে অনৈক্য, চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীরা এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানান, গত বছরের ২৮ অক্টোবর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ শহরের ওয়াজির আলী হাইস্কুল মাঠে এক জনসভায় হারুন অর রশীদকে সভাপতি করে জেলা জাতীয় পার্টির আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে দলের উপজেলা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে দলের জেলা কমিটি গঠন করা হবে বলে জনসভায় ঘোষণা দেন তিনি। কিন্তু ২৮ এপ্রিল স্থানীয় একটি দৈনিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক সুলতান আহমেদ স্বাক্ষরিত এক পত্রের বরাত দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে। ড. এম. হারুন অর রশীদকে সভাপতি ও মীর কামরুজ্জামান বাবলুকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন হয়েছে। এই কমিটি সম্পর্কে দলের জেলা, উপজেলা পর্যায়ের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কিছুই জানেন না। বিনা সম্মেলনের মাধ্যমে করা এ কমিটিতে দলটির জেলা পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মী বাদ পড়েছেন। জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির সভাপতি হারুন অর রশীদ গোপনীয়ভাবে কেন্দ্র থেকে পকেট এ কমিটি অনুমোদন করেছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের মিশ্রিত লোক দিয়ে কমিটি গঠন করে জাতীয় পার্টির মান সম্মান ক্ষুণ্ণ করার প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে বলে নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন।
নেতাকর্মীরা বলছেন, এই পকেট কমিটির দলের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ণ করছে। অবিলম্বে ওই কমিটি বাতিল করা না হলে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ মিছিল, ঝাড়– মিছিল, প্রতিবাদ, পাল্টা কর্মসূচি দিতে বাধ্য থাকবে। ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় ছাত্রসমাজের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ সোহাগ বলেন, জেলা জাতীয় পার্টির এ কমিটির কারণে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সন্দেহ, অবিশ্বাস, বৈরিতা ও বিরোধিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন কমিটির নেতাদের রাজনীতির কোনো অতীত ভূমিকা ও পদচারণা না থাকায় এ কমিটি প্রত্যাখান করেছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
জাতীয় পার্টির নেতা আজিজুর রহমান অটো বলেন, দলের জেলা সভাপতি হারুন অর রশীদের বিতর্কিত ভূমিকায় ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে প্রকাশ্যে গ্র“পিং ও কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। এনজিও কর্মীদের দিয়ে তিনি জেলা জাতীয় পার্টির রাজনীতি করছেন। দলীয় কার্যালয় বাদ দিয়ে তিনি সৃজনী বাংলাদেশের অফিসকে দলের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন।
এদিকে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা আগামী এক সপ্তার মধ্যে ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় পার্টির এই পকেট কমিটি বাতিলের জন্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কাছে দাবি জানান।